গিঁটে গিঁটে পিটুনি, আকুতি-মিনতির ভিডিও!

সিলেটের রাজন ও খুলনার রাকিবের নির্যাতনের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজশাহীতে একই কায়দায় দুই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে দুই কিশোরকে বেঁধে গিঁটে গিঁটে পেটানো হয়েছে। আর সেই নির্যাতনের দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর পবা উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামে। গত শুক্রবারের এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কিশোর জাহিদ হাসানের বাবা ইমরান হোসেন পবা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
urgentPhoto
গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আজিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার কিশোর জাহিদ হাসানকে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সে উপজেলার বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। অপর কিশোর একই এলাকার মাসুদ রানার ছেলে ইমনের (১৩) কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার বাবা-মা নেই। সে দাদা-দাদির কাছেই থাকে।
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনের কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য একজন উপপরিদর্শককে (এসআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে চৌবাড়িয়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে রাকিবের একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ফোন চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে কয়েকজন যুবক প্রথমে মৃত মাসুদ রানার ছেলে ইমনকে ধরে নিয়ে যায় ফজলুর বাড়িতে।
পরে নানার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহিদ হাসানকে।
শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দুই কিশোরকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এদের মধ্যে একজন মোবাইল ফোনে ওই নির্যাতনের দৃশ্য ধারণ করে। নির্যাতনের পরও দুই কিশোর মোবাইল চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
মোবাইলে ধারণ করা এক মিনিট ছয় সেকেন্ডের ভিডিও দৃশ্যে দেখা যায়, দুই কিশোরকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন করছে কয়েকজন ব্যক্তি। দুই কিশোরকে পাশাপাশি মাটিতে ফেলে তাদের পায়ের পাতা ওপরের দিকে তুলে ধরে রাখে দু-তিনজন। আর বাঁশের মোটা লাঠি দিয়ে দুজন অনবরত তাদের পায়ের পাতায় ও গিঁটে গিঁটে পেটাচ্ছে। নির্যাতনে যাতে কিশোররা বাধা দিতে না পারে, এ জন্য তাদের দুই হাত রশি বেঁধে দেওয়া হয়। থেমে থেমে চলে এ নির্যাতন।
নির্যাতনের মুখে চিৎকার করে কিশোররা মোবাইল চুরির কথা অস্বীকার করছে। নির্যাতনকারীদের মধ্যে একজনের গায়ে খয়েরি রঙের জ্যাকেট রয়েছে। চুল ছোট করে ছাঁটা। জ্যাকেটের পেছনে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘নাসির’। নির্যাতনকারী আরেকজনের চুলও এমন ছোট করে ছাঁটা ছিল।