১০ টাকার কমে সরে না হাতি

এ দোকান, ও দোকান ঘুরছে হাতি। পিঠে বসা মাহুত। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শুঁড় তুলে সালাম দিচ্ছে। তারপর শুঁড় এগিয়ে দিচ্ছে সোজা দোকানদারের কাছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে দিচ্ছে না কেউ, ততক্ষণ পর্যন্ত শুঁড় তুলছে না হাতি।
এভাবে প্রতি দোকান থেকে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকায় এভাবেই হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছিলেন সিরাজগঞ্জের বায়েজিদ ইসলাম।
দোকানদাররা জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারি বাজার থেকে হাতি দিয়ে চাঁদা তোলা শুরু হয়। এরপর সেখান থেকে নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট হয়ে সাহেব বাজার জুতাপট্টিসহ অন্যান্য এলাকায় চাঁদা তোলা হয়।
সাহেব বাজারের সিলভার হাউজের মালিক নূর ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, ‘দুপুরে হঠাৎ দেখি দোকানের ভেতরে শুঁড় ঢুকিয়ে দিয়েছে বিরাট আকৃতির এক হাতি। টাকা না দিলে হাতি দোকানের সামনে থেকে সরে না। বাধ্য হয়ে ২০ টাকা দিয়েছি।’
একই এলাকার জুতার দোকানি শওকত আলী বলেন, ‘বাজার ঘুরে ঘুরে চাঁদা তুলছে হাতিটি। যখন আমার দোকানে এসে হাতিটি শুঁড় এগিয়ে দেয়, আমি তার শুঁড়ে পাঁচ টাকা দেই। কিন্তু হাতিটি কোনোভাবেই পাঁচ টাকা নেয় না। আবার দোকানের সামনে থেকে সরেও না। ফলে বাধ্য হয়েই ১০ টাকা দিয়ে হাতিকে বিদায় করতে হয়েছে।’
শওকত বলেন, হঠাৎ শহরে হাতির দেখা মিললে সবার ভালো লাগতে পারে। তাই শখের বসে হাতিটিকে যে যা পারবে দিবে। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করাটা অন্যায়।
হাতির চাঁদা আদায়ের সময় কথা হয় হাতির মাহুত বায়েজিদ ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, হাতিটির নাম পান্না। বিভিন্ন যানবাহন, ঘরবাড়ি ও দোকানে হাতি দিয়ে টাকা তোলেন তিনি। তাঁর অন্য কোনো পেশা নেই। হাতি দিয়ে দৈনিক পাঁচ হাজার টাকার মতো আয় করেন।
তবে বায়েজিদ দাবি করেন, কাউকে টাকার জন্য জোর করেন না। হাতি দেখলে সবাই খুশিমনে টাকা দিয়ে দেন। খুশি করে দেওয়া টাকা চাঁদাবাজি হতে পারে না বলে দাবি করেন তিনি।