দুই জঙ্গির সাজা কমল, খুশি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায়ে দুই জঙ্গির ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম আহমেদ খলিলুর রহমান এ রায় দেন। দুই আসামি নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। তবে এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
একই সঙ্গে দুই আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলার ইটাগাছা গ্রামের শফিউল্লা ওরফে তারেক ওরফে আবুল কালাম ও নওগাঁর সারকডাঙ্গা এলাকার শহীদুল্লা ওরফে মাহবুব। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এর আগে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায়ে দুই জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া মামলার অপর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের খালাস দিয়েছিলেন আদালত। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে সেখান থেকে মামলাটি পুনরায় বিচারের জন্য রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু আরো বলেন, মামলাটি হাইকোর্ট থেকে পুনরায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসার পর প্রত্যক্ষদর্শী দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। তিনি বলেন, আগে মামলাটির রায়ে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। সেগুলো সংশোধন করে আদালত আজ রায় দিয়েছেন। সংশোধিত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আদালত যে রায় দিয়েছেন, তাতে আমরা খুশি। এ রায় দেশে জঙ্গিবাদ দমনে ভূমিকা রাখবে।’
২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ভোরে হাঁটতে বের হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস-সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকার বাসা থেকে ৩০০ গজ দূরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে। এ ঘটনায় ড. ইউনুসের ভাই আবদুল হালিম বাদী হয়ে ওই দিনই নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০০৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে মতিহার থানা পুলিশ। ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। তখন এ মামলায় ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করা হয়েছিল।