শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনা, বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার আবদুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।
আজ সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়টিতে হাজির হয়ে তদন্ত শুরু করেন কমিটির সদস্যরা। এ সময় শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী একই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র রিফাত, তার মা, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি ফারুকুল ইসলাম ও তিন শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, মোশারফ ও উত্তমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকেল পর্যন্ত চলে এই তদন্ত কার্যক্রম।
এদিকে তদন্ত কমিটি যখন পিয়ার সাত্তার আবদুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে কাজ করছিল সে সময় বিদ্যালয়ের বাইরে শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ করছিল এলাকাবাসী। তাঁরা শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের শাস্তি দাবি করেন।
ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন মহানগর হাকিম গোলাম নবী ও মাজহারুল ইসলাম। এই তদন্ত কমিটিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সহায়তা করছেন নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম শহিদুল ইসলাম।
গত ১৩ মে পিয়ার সাত্তার আবদুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র রিফাতকে বেত্রাঘাত করার জের ধরে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি অভিযোগ করে, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছেন। বিষয়টি মসজিদের মাইকে প্রচার করলে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এলাকার লোকজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করে। অবরুদ্ধ করে রাখে বিদ্যালয়ের ভেতর। খবর পেয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর বাইরে নিয়ে শত শত জনতা, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে কানধরে উঠবস করান। এই ঘটনার ভিডিও প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এর দুদিন পর টেলিভিশন ও দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হয়।
এই ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করা হয়। আদালতের নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ও জেলা প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করে।