গলাকেটে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক গ্রেপ্তার
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হত্যা মামলার আসামি স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবুকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর) দিনগত রাতে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় যশোরের নোয়াপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সৌদি প্রবাসী মো. এমরান হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি।
আশেকে এলাহী বাবুর বাড়ি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের আজাগরা গ্রামে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
গত গত ৮ অক্টোবর রোববার দিনগত রাতে হাজীগঞ্জ পৌরসভার হাজীগঞ্জ বাজারের ট্রাক রোডে ভাড়া বাসার তৃতীয় তলায় জবাই করে হত্যা করা হয় সৌদি প্রবাসী মো. এমরান হোসেনকে (৪০)। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির মো. আবুল বাশারের ছেলে। এই ঘটনায় নিহত এমরানের বোন রিনা বেগম বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার দিন মামলার দ্বিতীয় আসামি স্ত্রী ফারাজানা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তাঁর বাবার বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের জাখনি গ্রামে। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে একমাত্র সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আফনানকে (৮) নিয়ে হাজীগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকেন।
বাদী রিনা বেগম জানান, ভাবির (নিহত এমরান হোসেনের স্ত্রী ফারজানা বেগম) সঙ্গে সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবুর দীর্ঘদিন পরকীয়া প্রেম চলছিল। এ ঘটনায় পারিবারিকভাবে শালিসি বৈঠক ও থানায় অভিযোগ হওয়ায় ভাবি ও তাঁর পরিবার ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে। ভবিষ্যতে তিনি এমন কাজ আর করবেন না বলে জানান। একমাত্র ছেলের কথা ভেবে ভাইও তাঁকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু আমার ভাই ছুটি শেষে সৌদিতে চলে যাওয়ার পর তিনি আবারও সেই পরকীয়া প্রেম শুরু করেন। এরপর ভাই ছুটিতে দেশে এলে ভাবি ও তার প্রেমিক দুজনে মিলে পরিকল্পিতভাবে ভাইকে জবাই করে হত্যা করেন। এরসঙ্গে জড়িত ভাবির মা ও বোন। ভাবির বোনের চাচাতো দেবর হলেন সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবু।’
এরপর এ ঘটনায় রিনা বেগম বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলাটি করেন।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, সৈয়দ আশেকে এলাহী বাবুকে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আজই হাজীগঞ্জে নিয়ে আসা হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ নিয়ে বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ নিয়ে সহসাই সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।