‘বেগুন চাষ করি আমরা, লাভ পাচ্ছে ব্যবসায়ীরা’

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি হাওরের কৃষক মোবারক মিয়া ২০ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে আনুমানিক খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু দুঃখের বিষয় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই ধাপে জমি থেকে বেগুন তুলে বিক্রি করতে পেরেছেন মাত্র ৮ হাজার টাকায়। ঋণের টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন এমন চিন্তায় দিশেহারা কৃষক মোবারক মিয়ার মতো অনেক কৃষক।
আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকালে বড়িবাড়ি হাওরে গিয়ে দেখা যায়, ধানের পাশাপাশি বেগুন, আলু, মরিচ ইত্যাদি বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে যে ফসল উৎপাদন করেন কৃষকরা, সেই ফসলের সঠিক দাম না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত তারা।
বেগুন চাষি মোবারক মিয়া জানান, সুদের উপর টাকা এনে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করেছি। ফলন ভালো হলেও দাম পাচ্ছি না। প্রথম ধাপে বেগুন উত্তোলন করে ৭ টাকা কেজিতে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আর দ্বিতীয় ধাপে বেগুন উত্তোলন করে ১২ টাকা কেজিতে ৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আরেক ধাপে ১০-১২ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবো। বাজারে বেগুনের দাম কেজিপ্রতি ৬০-৮০ আবার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অথচ আমরা দাম পাচ্ছি না। আমরা কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করে লোকসান গুনতেছি, আর ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে।
আরেক কৃষক ফুল মিয়া বলেন, আড়তদাররা আমাদের কাছ থেকে অল্প দামে সবজি কিনে বাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করে। আমরা সঠিক দাম পাচ্ছি না, লাভবান হচ্ছে আড়তদাররা। যদি অল্প দামে আড়তদারদের কাছে ফসল বিক্রি না করি তাহলে জমিতে পড়ে নষ্ট হবে আমাদের কষ্টের ফসল। আমরা চাষিরা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি।
অন্যদিকে আড়তদারদের দাবি, জমি থেকে ফসল কেনার পর গাড়ি ভাড়া, শ্রমিক খরচসহ আরও কত ধরনের খরচ হয়ে থাকে, যার ফলে কিছুটা দাম বৃদ্ধি হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, আজ সোমবার কিশোরগঞ্জের ইটনা বড় বাজারে ৫০-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বেগুন।
ইটনা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ উজ্জ্বল শাহা বলেন, চলতি মৌসুমে ইটনা উপজেলার হাওরে ১৬ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। উন্নত জাতের বেগুন চাষ করায় ফলন হয়েছে ভালো। কিন্তু প্রকৃত দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওরের কৃষকরা।