সত্য কথা বলায় সারজিসের বিরুদ্ধে মামলা : ফয়জুল করিম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, ‘আজকে আমরা কি দেখেছি—সত্য কথা বলার কারণে সারজিসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, বিএনপির প্রতি আমার করুণা হয়। যাদের দ্বারা তোমরা মুক্ত হয়েছো, আজকে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়েছো! যদি সারজিসরা না থাকত, তাহলে তারেক জিয়া বাংলাদেশে ফেরার স্বপ্ন দেখত না। তোমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারত না।’
আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, ‘আজকে খোলা আকাশের নিচে মুক্তভাবে রাজনীতি করতে পারতে না, যদি তারা (সারজিসরা) না থাকত। যদি এরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলন না করত। আজকে আবার সারজিস সত্য কথা বলার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছো। বাংলাদেশের মানুষ তোমাদের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নেবে না।’
ফয়জুল করিম আরও বলেন, ‘আজকে সাদা পাথর লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। আমি বক্তব্য দিয়েছিলাম—পাথরকৌড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য, আমাদের খনিজ পাথর উত্তোলন করার জন্য। আমি পাথর লুটপাট করার জন্য বক্তৃতা করি নাই। আমি পাথর ভারত থেকে আনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। আমাদের দেশের পাথর উত্তোলন না করে ভারত থেকে পচা পাথর চড়া দামে আনার বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে তারা বলতেছে, আমার বক্তৃতার কারণে নাকি তারা পাথর চুরি করেছে। বেয়াকুবির অবস্থা কোথায়!’
ইসলামী আন্দোলনের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘পরিবেশ উপদেষ্টা ব্যর্থ হয়েছেন। পাথরকৌড়ি ছেড়ে না দিয়ে, বরং লুটের ব্যবস্থা করেছেন। (পাথর) লুট করার কারণে কী হয়েছে, বহিষ্কার করা হয়েছে। আপনাদের ধারণা কী? এতগুলো পাথর একদিনে সরানো হয়েছে নাকি দীর্ঘদিন ধরে এই কাজগুলো করা হয়েছে? এই মাসের পর মাস যারা পাথর চুরি করেছে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হয় নাই। আমি আগেই বলেছি চাঁদা তুললে পুরস্কার, ধরা পড়লে বহিষ্কার, ভাইরাল হলে গ্রেপ্তার। এতদিন চাঁদা তুলেছে বহিষ্কার করা হয়নি। এতদিন পাথর চুরি করেছে বহিষ্কার করা হয়নি, যখন ধরা পড়েছে তখন বহিষ্কার করেছে। দেখছেন অবস্থাটা কী? এতদিন বহিষ্কার করেনি। পাঁচ হাজারের ওপর বিএনপি নেতাকর্মী বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু চাঁদাবাজি কমতে আমরা দেখছি না। আপনারা চাঁদাবাজি করতে দেখছেন কিনা? কারণ এগুলো হলো আই ওয়াশ। এগুলো বদলানোর সিস্টেম নাই। যদি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দলেই বন্ধ হয়ে যাবে। ওদের রক্তেই চাঁদাবাজি।’
ফয়জুল করিম আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের আন্দোলন শুধু একটি নির্বাচনের জন্য হয়নি। জুলাই বিপ্লব কেন হয়েছিল—ওয়ালে ওয়ালে খাম্বায় খাম্বায় মানুষ লিখে দিয়েছে। আমি সাংবাদিক বন্ধুদেরকে প্রশ্ন করতে চাই, কোন ওয়াল বা খাম্বায় লেখা ছিল নির্বাচন চাই। আমার ধারণা আন্দোলনের সময় দেশের কোথাও এমনটি লেখা ছিল না।’
এ গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (মোমেনশাহী বিভাগ) জি এম রুহুল আমীন, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আজিজুর রহমান (জার্মানি), কিশোরগঞ্জ জেলা সদর দ্বীনি সংগঠনের সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম ফারুকীসহ অন্যান্যরা।