বাগেরহাটে আউশ ধানের বাম্পার ফলন

আবহাওয়া অনুকূল ও আগাম বৃষ্টিতে জমির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় বাগেরহাটে এবার আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলায় ৩ হাজার ৯৩৭ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৪৯৬ মেট্রিক টন।
এ পর্যন্ত ৩২ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। এরমধ্যে বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, কচুয়া, মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলায় ১ হাজার ২৫২ হেক্টর জমি থেকে ৩ হাজার ৬৭৫.৯৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে।
চাষিদের অভিযোগ, শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে বেশি খরচ হচ্ছে। প্রতিজন শ্রমিককে প্রতিদিন ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মজুরি ও খাবার দিতে হচ্ছে। তবে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মাসেই পুরো ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হবে।
কচুয়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরীক্ষিত জোয়ার্দার জানান, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় মাঠে থাকা ধানের কোনো ক্ষতি হবে না। বাকি আউশ ধান কাটা চলতি মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, কচুয়ায় প্রতিবছর আউশ ধানের আবাদে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এবছর কচুয়া উপজেলায় ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে ৪১৫.৮ মেট্রিক টন চাল।
জোয়ার্দার আরও জানান, এখানকার বলেশ্বর নদীর পানি মিষ্টি হওয়ায় দিন দিন আউশের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আউশের ব্যাপক ফলনে এলাকার চাষিরা অত্যন্ত খুশি। তাদের মুখে হাসির ঝিলিক লেগে আছে।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে আউশ চাষে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয় এবং উৎপাদিত ধান ও খড়সহ প্রায় ৯০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এ ধানে সেচের প্রয়োজন হয় না এবং সারও কম লাগে। তাই ফলন তুলনামূলক কম হলেও লাভ বেশি হয়। এছাড়া আউশ আবাদের পর একই জমিতে আমন ও বোরো ধানের চাষ সম্ভব হয়, ফলে জমির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
বাগেরহাট খামারবাড়ির কৃষি কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেন বলেন, পানি বাড়ার সাথে সাথে ‘আউশ ১০৬’ জাতের ধান গাছের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ধানের চারায় পচন ধরে না। এ বছর আগাম বৃষ্টির কারণে নদীর পানির লবণাক্ততা হ্রাস পেয়েছে এবং গত মৌসুমের তুলনায় আউশ ধানের ফলন বেড়েছে।
মো. মোতাহার হোসেন আরও বলেন, ২০২৪ সালে বাগেরহাট জেলায় ৪ হাজার ৮২৭ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৯৩৭ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৪৯৬ মেট্রিক টন চাল।