শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ ১৮২ জনের নামে মামলা

চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া এক শিক্ষার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা, সাবেক মন্ত্রী, আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এক বছর এক মাস পর আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে এ মামলা করেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী এ কে এম নুরুল্লাহ।
এ কে এম নুরুল্লাহ কিশোরগঞ্জ জেলার বগাদিয়া বিন্নাগাঁও গ্রামের মো. রতন মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকায় বসবাস করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী তাসনিম আক্তার নিশাত জানান, গত বছরের ৪ আগস্ট নিউ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে হত্যাচেষ্টার শিকার হন নুরুল্লাহ। সেই অভিযোগেই মামলা করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আওয়াল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।
এ ছাড়া আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সাইফপাওয়ার টেকের এমডি তরফদার রুহুল আমিন, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমদ সিদ্দিক, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ আরও অনেককে।
আসামির তালিকায় আরও আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রুহেল, দিদারুল আলম, আবদুর রহমান বদি, আশেক উল্লাহ রফিক, সাইমুম সরওয়ার কমল, এস এম আল মামুন, এম এ লতিফ, আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী ও মহিউদ্দিন বাচ্চু।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট নুরুল্লাহ নিউ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন। তখন আসামিদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে নুরুল্লাহ দুই পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হন। পরে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার শরীর থেকে ১২টি বুলেট ও তিনটি রাবার বুলেট বের করা হয়।
বাদীর দাবি, দীর্ঘ চিকিৎসা ও আসামিদের নাম-পরিচয় সংগ্রহে সময় লাগায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।