ঘরে ঢুকে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদককে কুপিয়ে হত্যা

ভোলার সদর উপজেলার চরনোয়াবাদ এলাকায় ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আমিনুল ইসলাম নোমানীকে তার নিজ বাসভবনে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আমিনুল ইসলাম নোমানী ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস এবং জাতীয় ইমাম সমিতির ভোলা জেলা শাখার সহসভাপতি ছিলেন। নোমানী শিক্ষকতার পাশাপাশি ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিব ছিলেন। তার বাবা মাওলানা এনামুল হক। নোমানী ভোলা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
জানা গেছে, তিনি রাতে এশার নামাজ মসজিদে আদায় করেন এবং এরপর বাসায় ফিরে যান। ঘটনার সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। বাসায় তার স্ত্রী ও সন্তানরা ছিলেন না। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে নোমানীকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে চলে যায়। স্থানীয়রা তার চিৎকার শুনে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভোলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাতেই ভোলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
নিহতের হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলেম সমাজ, স্বজন ও প্রতিবেশির মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতাল প্রাঙ্গণসহ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং নোমানীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম জানান, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জামায়াতে ইসলামীর ভোলা পৌর শাখার আমির জামাল উদ্দিন বলেন, একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে, আসামিদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আলামত সংগ্রহ করা হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।