সিআইডি কর্মকর্তা আসাদের বিরুদ্ধে লন্ডন প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লন্ডন প্রবাসী আসাদ চৌধুরীর জমি দখল এবং তার কাছে থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, খামারে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই সিআইডি কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু নারায়ণগঞ্জে কর্মরত আছেন।
ভুক্তভোগী আসাদ চৌধুরী এবং তার স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার বাড়ইপাড়া এলাকায় আসাদ হোসেন চৌধুরী ২০০৬ সালে হিজলহাটি মৌজায় লেহাজ উদ্দিনের কাছ থেকে সাব কবলা দলিল মূলে ২৮২নং খতিয়ানের ৭০নং আরএস দাগে ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরে আসাদ হোসেন চৌধুরী ঔ জমির চারপাশে সীমানা প্রাচীর তৈরি করে ভিতরে ঘরবাড়ি ও গরুর ফার্মসহ ফলের বাগান করে লন্ডনে চলে যান, যা দেখাশোনার দায়িত্ব দেন মো. আলমকে।
আসাদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন পর এই জমির বিক্রেতা লেহাজ উদ্দিন মারা গেলে তার ছেলে সিআইডি কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু এসে তার পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিকানা দাবি করেন। পরে উক্ত জমি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মো. আলমকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসাদ চৌধুরীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে কালিয়াকৈর থানায় ২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন জমি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মো. আলম।
ভুক্তভোগী আসাদ চৌধুরী ও তার স্বজনরা আরও বলেন, জমি সংক্রান্ত জটিলতার কথা শুনে জমির মালিক আসাদ হোসেন চৌধুরী ২০২৫ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসেন। তাকেও নানা হুমকি দেওয়া এবং তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। গত ৩১ আগস্ট সিআইডি কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু হিজলহাটি এলাকার ফালু মিয়ার ছেলে আ. সাত্তার, বড়ইছুটি এলাকার সুরুউদ্দিনের ছেলে শিপন হোসেন, হিজলহাটি এলাকার ইয়ার উদ্দিন মন্ডলসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই জমিতে থাকা লন্ডন প্রবাসী আসাদ চৌধুরীর খামারে প্রবেশ করে দায়িত্বে থাকা মো. আলমকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং খামারটিতে লুটপাট চালিয়ে ১০টি গরু, অফিস কক্ষের টিভি ফ্রিজ ও গোয়ালঘরের টিন খুলে নিয়ে যায়। পরে খামারটির দায়িত্বে থাকা আলমের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভর্তি করা হয়। হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ক্ষান্ত হননি সিআইডি কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু। লন্ডন প্রবাসী আসাদ চৌধুরীকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন এয়ারপোর্টে তাকে আটকে দেওয়ার এবং তার নামে নানা ধরনের মামলার দিয়ে বিদেশ গমন বাধাগ্রস্ত করার।
এ প্রতিবেদকের কাছে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন সিআইডির কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু। তবে ওই জমি নিজের পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে দাবি করেন তিনি।
সিআইডি কর্মকর্তা আসাদ হোসেন হিরু মোবাইলফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি তার পৈতৃক সম্পত্তির প্রকৃত দাবিদার হিসেবে আদালতে মামলা করেছেন।
আসাদ হোসেন হিরু আরও বলেন, সিআইডির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মক্ষেত্রে থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করা কিংবা লুটপাট চালানো তার দ্বারা সম্ভব নয়। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।