লক্ষ্মীপুরে সুপারি চাষে উৎসাহী হচ্ছেন কৃষকরা

উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে বর্তমানে সুপারি চাষে কৃষকদের আগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দিন দিন সুপারির উৎপাদন যেমন বাড়ছে, তেমনি এই ফসলের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি আসছে। অন্যান্য ফসলের চাষাবাদের তুলনায় ঝুঁকি কম এবং পরিচর্যায় খরচ কম হওয়ায় বেশিরভাগ কৃষক সুপারি চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে লক্ষ্মীপুরের ৫টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। সুপারি গাছের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, একবার রোপণ করলে তেমন কোনো পরিচর্যা ছাড়াই টানা ২৫-৩০ বছর ধরে ফলন পাওয়া যায়। প্রতি হেক্টরে প্রায় আড়াই থেকে তিন মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হয়।
চলতি বছর জেলায় প্রায় ২০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা হবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে। এবার প্রতি কাওন (১৬ পোন) সুপারি ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে গত বছর প্রতি কাওন সুপারি ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ, এবার প্রতি কাওনে কৃষকরা গত বছরের চেয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি পাচ্ছেন। সুপারি চাষী মনির হোসেন মোল্লা ও নুরনবীর মতো অনেকেই ফলন ভালো হওয়ায় এবং গত বছরের তুলনায় দাম বেশি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
লক্ষ্মীপুরের উৎপাদিত সুপারি জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী ও শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। সদর উপজেলার দালাল বাজার, রসুলগঞ্জ, রায়পুর বাজার, হায়দারগঞ্জ, খাসের হাটসহ অন্তত শতাধিক স্থানে এখন জমজমাট সুপারির হাট বসছে, যেখানে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জহির আহমেদ বলেন, অনুকূল আবহাওয়া, আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন এবং ভালো ফলনের কারণে সুপারির উৎপাদন মাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।