ঢাবির অধ্যাপক ইমতিয়াজ ও আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জানা গেছে, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত এক বইয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের ভিত্তিতে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না তিনি। এছাড়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতা ড. এ এস এম আমানুল্লাহর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকবিষয়ক একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত ‘Historicizing 1971 Genocide: State versus Person (UPL. 2009)’ শীর্ষক গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদ্ঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত কতিপয় তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি। সভায়, উল্লিখিত গ্রন্থে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
গ্রন্থের লেখক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং প্রকাশক ইউপিএলকে গ্রন্থটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননাকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এছাড়া, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অন্যদিকে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহর ফেসবুক পেইজে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মনগড়া ও ভিত্তিহীন পোস্টের বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের একটি প্রতিবেদন সভায় উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, এটি পাঠ্যপুস্তক, সরকারের শিক্ষানীতি ও ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার একটি অপপ্রয়াস। অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ ইতোমধ্যে তার কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার শর্তে তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন সভায় মঞ্জুর করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা সচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) ও প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) উপস্থিত ছিলেন।