হলে সিট না পেয়ে পাঁচ কক্ষে তালা দিল ক্ষুব্ধ রাবি শিক্ষার্থী

সিট না পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের কক্ষে আটকে রেখে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে হলের দ্বিতীয় ব্লকের দ্বিতীয় তলার পাঁচটি রুমে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদ বিন একরাম দায় স্বীকার করেছেন। সাইদের দাবি, বারবার প্রতিশ্রুতি পেয়েও হলে উঠতে না পারায় প্রতিবাদ জানাতে রুমগুলোতে তালা দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি কক্ষে উঠার জন্য হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও হলে সিট দেননি। সর্বশেষ ২২০ নম্বর কক্ষে একটি সিট পেলেও সেটি পরবর্তীতে দখল হয়ে যায়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, আজ দুপুরের দিকে হলের দ্বিতীয় ব্লকের দ্বিতীয় তলায় ২১৯ থেকে ২২৩ নম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচটি কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কক্ষের ভেতরে আটকা পড়েন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলীর উপস্থিতিতে হল প্রশাসনের কর্মচারীরা তালাগুলো ভেঙে শিক্ষার্থীদের বের করেন। এদের মধ্যে একজন ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীও ছিলেন।
তালা লাগানোর সময় ২২২ নম্বর কক্ষে পড়ছিলেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পড়ছিলাম। বাহির থেকে দরজা নড়াচড়ার শব্দ হচ্ছিল। দরজার কাছে গিয়ে দেখি দরজা খুলছে না। বুঝতে পারি দরজায় তালা লাগানো হয়েছে।’
সোহানুর রহমান আরও বলেন, ‘দরজার ফাঁক দিয়ে সাদা শার্ট পরিহিত একটা ছেলেকে চলে যেতে দেখলাম। ছেলেটি যাওয়ার সময় বলেছিল, ‘ভাই একটু পরেই খুলে দেওয়া হবে।’
তালা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সাইদ বিন একরাম বলেন, ‘এটা শুধু আমার একার বিষয় না। আমিসহ অনেকেই হলে উঠতে পারছি না। অন্যরা টাকা দিয়ে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে হলে উঠে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যাদের সিট দরকার তারা হলে উঠতে পারছে না। এসবের প্রতিবাদে আমরা তালা দিয়েছি।’
এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন বলেন দাবি করেন সাইদ। তবে তাঁদের কারও নাম প্রকাশ করেননি।
সাইদ বিন একরাম আরও বলেন, ‘হলের ২২০ নম্বর রুমের একটি সিটে আমার উঠার কথা ছিল। কিন্তু আমি উঠার আগেই অন্যরা ওই সিট দখলে নিয়েছে। এতে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ব্লকের পাঁচটি কক্ষে তালা লাগিয়েছি।’
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হলের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী, হল প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা আলোচনা করে তালা খুলে দেন।
এ বিষয়ে জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন বলেন, ‘রুমে তালা দেওয়ার খবর পেয়েই দ্রুত সেটি ভেঙে ফেলেছি। এ ঘটনার পর জড়িতদের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, ‘কোনো ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেনো তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’