কুয়েটের বর্ষপূর্তিতে বর্ণাঢ্য আয়োজন

বর্ণাঢ্য আয়োজন পালিত হচ্ছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ১৪তম বর্ষপূতি। বর্ণিল রঙে সাজানো হয়েছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ শনিবার সকাল থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব শুরু হয়।
বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর।
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি সমাবেশ। পৌনে ১০টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা।
পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসির একটি চৌকস দল প্রধান অতিথিকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
অনুষ্ঠানের ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞান ও গবেষণায় আরো মনোযোগী হতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে যে স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন, তা আজকের কুয়েট। কুয়েট গ্রাজুয়েটদের বেকার হিসেবে বসে থাকতে হয় না। বিষয়টি আমাদের আনন্দ দেয়।’
কুয়েট উপাচার্য মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা কুয়েটকে আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। সবার সহযোগিতায় কুয়েট শিক্ষা, গবেষণার ক্ষেত্রে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক মিহির রঞ্জন হালদার।
পরে সকাল পৌনে ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, আমন্ত্রিত অতিথির ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ফুলবাড়ী গেট এলাকা প্রদক্ষিণ করে। শেষে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনী, টেকনিক্যাল পেপার প্রেজেন্টেশন, কুয়েটের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইউজিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মো. বজলার রহমান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক মিহির রঞ্জন হালদার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আবদুর রফিক এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক সোবহান মিয়া।
দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’ চত্বরে গাছের চারা রোপণ করা হয়। সোয়া ১টায় সম্প্রসারিত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনের শুভ উদ্বোধন করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাব উম্মুক্ত করা, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল, বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের ওপর শিক্ষার্থীদের পাঠ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
২০০৩ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় কুয়েট। প্রতি বছর ১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়। কিন্তু এবার ঈদের ছুটি থাকায় আজ দিবসটি পালন করা হয়।