চড়া সুর, কড়া গান
রক-মেটালের সেকাল-একাল

গেল শতকের চল্লিশ দশক, শেষদিকের সময়। মার্কিন মুলুকে এক নতুন কায়দার গান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠল। এর আগেই ওদিকটায় আফ্রো-আমেরিকানদের বদৌলতে ব্লুজ, জ্যাজ, বুগি উগি, গসপেল মিউজিক জনপ্রিয়তায় জম্পেশ। সেসব জঁরার (চাইলে পড়তে পারেন ‘জেনার’ বা ‘জনরা’) সঙ্গে আমেরিকার ফোক টোন মিশে প্রচলন হয় রক এন রোল-এর। এই ঘরানার গানে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিলেন এলভিস প্রেসলি। পঞ্চাশের দশকে এই রক এন রোল থেকেই আসে রক মিউজিক। যে গানের দ্রুতলয় সুর আর কানের পর্দা কাঁপিয়ে দেওয়ার কথা চট করে গেলা মুশকিল, তবে একবার এতে মজলে তাল ছাড়ানো আরো কঠিন!
এই ঘরানার গানের আদিভূমি হিসেবে বলা যেতে পারে আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম। এর বিকাশও ঘটে বেশ দ্রুত। দ্রুতগতির আর উচ্চ নিনাদের জঁরাটি তখন তো বটেই, এখনো তরুণদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এর বেশ কিছু সাব-জঁরাও ক্রমশ এককভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে— সাইকাডেলিক রক, প্রোগ্রেসিভ রক, অল্টারনেটিভ রক, হেভি মেটাল, থ্র্যাশ মেটাল, ব্ল্যাক মেটাল, ডেথ মেটাল আরো কত কি!
রক মিউজিকে, বা রক ব্যান্ডের লাইন-আপে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইন্সট্রুমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইলেকট্রিক গিটারকে। সঙ্গে বেইস গিটার এবং ড্রামস। মুখ্য ইন্সট্রুমেন্ট এগুলোই। কম্পোজিশনগুলো হয় মূলত ৪/৪ টাইম সিগনেচারে, ভার্স-কোরাস ফর্মে। টেম্পো অবশ্যই দ্রুতগতির।
ষাটের দশকের রক ঘরানার গানগুলোকে ক্ল্যাসিক রক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ সময়ে জনপ্রিয় হওয়া সাব-জঁরাগুলো হলো— ব্লুজ রক, জ্যাজ রক, ফোক রক, কান্ট্রি রক, র্যাগে রক। জঁরাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যান্ডগুলোর মধ্যে ব্লুজ রক ঘরানার রোলিং স্টোনস, ইয়ার্ডবার্ডস, অ্যানিমেল, ফোক রক ঘরানার বার্ডস, কান্ট্রি রক ঘরানার বব ডিলান, ইগলস অন্যতম।
পরে ব্লুজ রক, ফোক রকের প্রভাবে সত্তরের দশকের শুরুতেই আসে সাইকাডেলিক রক। সাইকাডেলিকের পাইওনিয়ার হিসেবে বলা হয় বিটলস, বিচ বয়েজ, বার্ডস এবং ইয়ার্ডবার্ডস-এর নাম। পরে জিমি হেনড্রিক্স এক্সপেরিমেন্ট, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ডোরস, ক্রিম, জেফারসন এয়ারপ্লেন-এর হাত ধরে সাব-জঁরাটি বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
সত্তরের দশকের প্রথমার্ধেই সাইকাডেলিক রকের প্রভাবে আরো বেশ কয়েকটি সাব-জঁরার প্রচলন হয়।এর মধ্যে তিনটি অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠে— প্রোগ্রেসিভ রক, গ্ল্যাম রক এবং হার্ড রক। প্রোগ্রেসিভ রকের কম্পোজিশনগুলো স্বভাবগতভাবেই একটু জটিল। প্রথাগত ৪/৪ টাইম সিগনেচারের বদলে প্রায়ই ৫/৮, ৭/৮ ব্যবহৃত হয়। গানে প্রায়ই একাধিক টেম্পো, কী-নোট বা টাইম সিগনেচার ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে গ্ল্যাম রকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয় স্টেজ অ্যাপেয়ারেন্সের প্রতি। ব্যবহার করা হয় জবরজং রংচঙে ঝিকিমিকি পোশাক-আশাক। আর হার্ড রক মনোযোগী হয় অ্যাগ্রেসিভ ভোকাল আর ডিসটর্শন টোন, বিশেষ করে গিটারের ডিসটর্শন টোনের প্রতি। এই জঁরাতে ইন্সট্রুমেন্টের মধ্যে গিটার-বেইস-ড্রামসের পাশাপাশি গুরুত্ব পেতে থাকে পিয়ানো আর কীবোর্ড-ও। এ সময়ের ব্যান্ডগুলোর মধ্যে প্রোগ্রেসিভ রক ঘরানার পিঙ্ক ফ্লয়েড, জেনেসিস, কিং ক্রিমসন, জেথ্রো টুল, গ্ল্যাম রক ঘরানার অ্যালিস কুপার, কিস, টি-রেক্স, রক্সি মিউজিক, এবং হার্ড রক ঘরানার স্করপিয়নস, লেড জ্যাপেলিন, ডিপ পার্পল, গানস এন’ রোজেস, দ্য হু, অ্যারোস্মিথ, এসি/ডিসি অন্যতম।
সত্তরের দশকের শেষার্ধে রকের আরেকটি সাব-জনরা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে— পাঙ্ক রক। পরে এর প্রভাবে পাঙ্ক কালচারও গড়ে ওঠে। এই ধারার অন্যতম ব্যান্ড সেক্স পিস্তলস, ক্ল্যাশ, টেলিভিশন। পরে আশির দশকে পাঙ্ক রকের প্রভাবে আরো কয়েকটি সাব-জঁরার প্রচলন হয়। সেগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় তিনটি ধারা হলো নিউ ওয়েভ, পোস্ট-পাঙ্ক এবং হার্ডকোর পাঙ্ক। এর মধ্যে নিউ ওয়েভ এবং পোস্ট-পাঙ্কের প্রভাবে পরে গথিক রক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিকের মতো জঁরার প্রচলন হয়।
তবে আশির দশকের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাব-জঁরা অল্টারনেটিভ রক। আর নব্বইয়ের দশকে তা একক জঁরার মতোই প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। অল্টারনেটিভ রকের প্রথম তারকা ব্যান্ড ‘নির্ভানা’। তবে এই দশকের শেষভাগ থেকে জঁরাটির জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। বিংশ শতকের শুরুতে এসে ক্রিড, কোল্ডপ্লে, রেডিওহেড-এর মতো ব্যান্ডগুলোর সাফল্য সাব-জনরাটিকে আবার আলোয় নিয়ে আসে। রকের এই সাব- জঁরা থেকে আরো বেশ কয়েকটি সাব- জঁরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো গ্রুঞ্জ, ব্রিটপপ এবং ইন্ডি রক।
আবার ষাটের দশকের শেষ দিকে রক মিউজিকের আরেকটি সাব- জঁরা তৈরি হয়, পরে যেটি অনেকটাই আলাদা জঁরা হয়ে উঠেছে। এই জঁরার গানগুলো আরো দ্রুত লয়ের, আরো উচ্চ নিনাদের, আরো উদ্দাম বিটের, আরো বেশি ডিস্টর্টেড, গিটার সলোর আধিক্য আরো বেশি। এক কথায় বললে, আরো বেশি পৌরুষদীপ্ত, আরো বেশি অ্যাগ্রেসিভ। হ্যাঁ, হেভি মেটালের কথাই বলা হচ্ছে। বা সংক্ষেপে মেটাল। ১৯৬৮ সালে ইংল্যান্ডে যাত্রা শুরু হয় তিনটি ব্যান্ডের। লন্ডনে লেড জ্যাপেলিন, বার্মিংহামে ব্ল্যাক স্যাবাথ, হার্টফোর্ডশায়ারে ডিপ পার্পল। এই তিনটি ব্যান্ডকেই মূলত হেভি মেটালের পাইওনিয়ারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
সত্তরের দশকের শুরুতেই আবির্ভাব ঘটে ‘জুডাস প্রিস্ট’-এর। এই জঁরায় ব্লুজের যে প্রভাব ছিল, জুডাস প্রিস্ট সেখান থেকে বের হয়ে আসে। দশকের মাঝামাঝিতে এলো ‘মোটরহেড’। তারা জঁরাটিতে তখনকার ভীষণ জনপ্রিয় পাঙ্ক রকের ছোঁয়া নিয়ে আসে।
সত্তরের দশকের শেষে পাঙ্ক রকের জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে। তরুণরা আরো অ্যাগ্রেসিভ কিছুর দিকে ঝুঁকতে থাকে। তার প্রভাব রক ঘরানায় তো বটেই, হেভি মেটালেও খুব ভালোভাবেই পড়ে। প্রচুর ব্যান্ড অ্যাগ্রেসিভ এই জঁরায় গান করতে শুরু করে। ১৯৭৯ সালে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক হেভি মেটালের এই বিকাশকে বর্ণনা করেন নিউ ওয়েভ অফ হেভি মেটাল হিসেবে। বিশেষ করে এই জোয়ারের দেখা মেলে ইউরোপে। টার্মটি পরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই সময়ে হেভি মেটালের নেতৃত্ব দেয় আয়রন মেইডেন, স্যাক্সনের মতো ব্যান্ডগুলো। এই দশকের শেষ ভাগ থেকেই মেটাল-ভক্তদের মেটালহেড এবং হেডব্যাঙ্গার্স বলার চল শুরু।
আশির দশকে হেভি মেটাল আরো বিকশিত, আরো জনপ্রিয় হতে থাকে। এ দশকের শুরুতেই মেটালে ক্রু, পয়জন-এর মতো ব্যান্ডগুলোর হাত ধরে গ্ল্যাম মেটাল সাফল্য লাভ করে। এর পরেই আবির্ভাব হয় হেভি মেটালের সম্ভাব্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সাব- জঁরার— থ্র্যাশ মেটাল। থ্র্যাশ মেটালকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে তোলে চারটি ব্যান্ড— মেটালিকা, মেগাডেথ, স্লেয়ার এবং অ্যানথ্রাক্স।
এরই মধ্যেই এক শ্রেণির শ্রোতা তৈরি হয়ে যায়, যাদের চাহিদা আরো অ্যাগ্রেসিভ কম্পোজিশন। সেই ধারণা থেকেই থ্র্যাশ মেটালের প্রভাবে হেভি মেটালের আরো কয়েকটি সাব- জঁরার আবির্ভাব হয়। থ্র্যাশ মেটালের চার কুতুব ব্যান্ডের মধ্যে স্লেয়ার (এবং এক্সোডাস!) ছিল একটু বেশিই এগ্রেসিভ। বিশেষ করে তাদের প্রভাবে প্রচলন হয় ডেথ মেটালের।
ডেথ মেটালের পাইওনিয়ারের কৃতিত্ব দেওয়াও হয় ‘ডেথ’ নামের ব্যান্ডটিকে। আশির দশকের শেষ দিকে অবিচুয়ারি, মরবিড অ্যাঞ্জেল, নাপাম ডেথ-এর মতো ব্যান্ডগুলো সাব- জঁরাটিকে আরো প্রতিষ্ঠিত করে। পরে ডেথ মেটালেরও বেশ কিছু সাব- জঁরা হয়ে যায়— মেলোডিক ডেথ মেটাল (কারকাস, ইন ফ্লেইমস, ডার্ক ট্রাঙ্কুইলিটি, এট দ্য গেট, চিল্ড্রেন অব বডম, আর্চ এনিমি), প্রোগ্রেসিভ ডেথ মেটাল (নাইল, এজ অব স্যানিটি, ওপেথ), ডেথ ডুম (অটোপসি), ডেথগ্রিন্ড (ব্রুজেরিয়া, গুট), ডেথকোর (সুইসাইড সাইলেন্স), ডেথ এন রোল (অ্যাভাটার, সিক্স ফিট আন্ডার) এবং ব্ল্যাকেন্ড ডেথ মেটাল (বেলফেগোর, বেহেমথ)।
ডেথ ডুমের সঙ্গে হেভি মেটাল-গথিক রকের মিশেলে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে আসে আরেক সাব-জঁরা গথিক মেটাল। এই ঘরানার পাইওনিয়ার ধরা হয় প্যারাডাইস লস্ট, মাই ডাইং ব্রাইড এবং অ্যানাথেমাকে। পরে টাইপ ও নেগেটিভ, গ্যাদারিং, থিয়েটার অব ট্র্র্যাজেডি ব্যান্ডগুলো ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট অ্যাস্থেটিক’ প্রতিষ্ঠা করে (একই গানে অ্যাগ্রেসিভ পুরুষ ভোকাল ও কমনীয় নারি ভোকাল)। পরে ক্র্যাডল অব ফিল্থ, মুনস্পেল, থিয়েটার দাস্ ভ্যাম্পায়ার্স এই সাব-জনরার সঙ্গে ব্ল্যাক মেটালের মিশেল ঘটায়। এই ঘরানার অন্যান্য ব্যান্ডের মধ্যে লেকুনা কয়েল, এভেনসেন্স, পয়জন ব্ল্যাক অন্যতম।
ডেথ মেটালেই লিরিকের মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল মৃত্যু। এরপর ব্ল্যাক মেটাল এ ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। সেখানে বিষয়বস্তু কেবল মৃত্যুতেই সীমাবদ্ধ থাকল না। শয়তানের উপাসনা বা স্যাটানিজম, প্যাগানিজমও নিয়মিত বিষয়বস্তু হতে লাগল। এই সাব- জঁরা গানের প্রভাবে নরওয়েতে নব্বইয়ের দশকে পঞ্চাশটিরও বেশি চার্চ পোড়ানো হয়! ফার্স্ট ওয়েভ ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ডগুলোর মধ্যে ভেনম, মার্সিফুল ফেইট, হেলহ্যামার, সেল্টিক ফ্রস্ট, সেকেন্ড ওয়েভের মেইহেম, ডার্কথ্রোন, বার্জাম, গর্গোরথ, এনস্লেভড, ইমর্টাল অন্যতম। অন্যান্য ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ডগুলোর মধ্যে মারডুক, ডিমু বর্গির, কোভনান্ট, ক্র্যাডল অফ ফিল্থ, অ্যামন অ্যামার্থ, ইন দ্য উডস, রিপালশন, সেপালচুরা অন্যতম।
যে সব মেটালহেডরা মৃত্যু-শয়তান-প্যাগান ছাড়া এগ্রেসিভ হেভি মেটালের ভক্ত, ডেথ-ব্ল্যাকের এই জোয়ারে তাদের অবশ্য খুব বেশি হা-পিত্যেশ করতে হয়নি। আশির দশক থেকেই ‘প্যান্টেরা’র হাত ধরে দেখা দেয় গ্রুভ মেটাল। পরে এই সাব- জঁরাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে এক্সোর্ডার, ল্যাম্ব অব গড, সেপালচুরা, গোজিরা, মেশিন হেড, বাইজেন্টাইন, ফাইভ ফিঙ্গার ডেথ পাঞ্চ।
আশির দশকের মাঝামাঝিতে প্রোগ্রেসিভ রকের প্রভাবে হেভি মেটালের আরও একটি সাব- জঁরার প্রচলন হয়—প্রোগ্রেসিভ মেটাল। তবে ঘরানাটি জনপ্রিয় হয় নব্বইয়ের দশকে এসে। এই ঘরানার ব্যান্ডগুলোর মধ্যে ড্রিম থিয়েটার, টুল, পর্সুপাইন ট্রি, কুইন্সরাইখ, ফেটস ওয়ার্নিং অন্যতম।
আশির দশকের শেষ দিকে থ্র্যাশ মেটালের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ড্যান্স মিউজিকের মিশেলে আরেকটি সাব- জঁরা চালু হয়— ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেটাল। মেরিলিন ম্যানসন, নাইন ইঞ্চ নেইলস, স্ট্যাটিক-এক্স-এর হাত ধরে আমেরিকায় জনপ্রিয় হওয়া এই ঘরানা পরে জার্মানিতেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে র্যামস্টেইন, হ্যানজেল অ্যান্ড গ্রেটেলে হাত ধরে।
আশির দশকের শেষ দিকে হেভি মেটালের আরো একটি সাব- জঁরার প্রচলন হয়েছিল, কিন্তু তা জনপ্রিয় হয় নব্বইয়ের দশকের শেষে এসে— মেটালকোর। আর্থ ক্রাইসিস, ইন্টিগ্রিটির মতো ব্যান্ডগুলো মেটালকোর সাব-জঁরার পাইওনিয়ারের স্বীকৃতি পেলেও, ঘরানাটিকে জনপ্রিয় করার স্বীকৃতির দাবীদার কিলসউইচ এনগেজ, বুলেট ফর মাই ভ্যালেন্টাইন, আন্ডারওথ, ট্রিভিয়াম, এজ আই লে ডাইং-এর মতো ব্যান্ডগুলো।
আশির দশকে থ্র্যাশ মেটালের পাশাপাশি আরেকটি সাব- জঁরাও বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিল— অল্টারনেটিভ মেটাল। অল্টারনেটিভ রক প্রভাবিত মেটালের এই সাব- জঁরা হার্ড অল্টারনেটিভ নামেও পরিচিত। অল্টারনেটিভ মেটালের প্রথম সাব-জনরা হিসেবে ধরা যেতে পারে ফাঙ্ক মেটালকে, আশির দশকের মাঝামাঝিতেই যার চল শুরু হয় রেড হট চিলি পিপার্স-এর মতো ব্যান্ডগুলোর হাত ধরে। পরে সিস্টেম অফ এ ডাউন, ডিসটার্বড, গডস্ম্যাক, অল্টার ব্রিজ-এর মতো ব্যান্ডগুলো এখনো সাব- জঁরাটিকে জনপ্রিয় করে রেখেছে।
অল্টারনেটিভ মেটালের বেশ কিছু জনপ্রিয় সাব-জঁরা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী সাব-জঁরা হলো নিও মেটাল। অল্টারনেটিভ মেটালের সঙ্গে হিপহপ, অল্টারনেটিভ রক, ফাঙ্ক, গ্রুঞ্জ-এর মিশেলে এ ঘরানার বৃদ্ধি। এ ঘরানায় গিটার সলোর চেয়ে রিফের ব্যবহারই বেশি হয়। অনেক ব্যান্ডের গিটারিস্টই তাঁদের মিউজিককে আরেকটু ভারি করতে একটা অতিরিক্ত বি স্ট্রিংসহ সাত স্ট্রিংয়ের গিটার ব্যবহার করে থাকেন। অনেক ব্যান্ডই ডিজে ব্যবহার করে, অনেকে র্যাপ ব্যবহার করে। এ ঘরানার ব্যান্ডগুলোর মধ্যে কর্ন, স্লিপনট, লিম্প বিজকিট, লিঙ্কিন পার্ক অন্যতম।