৩১ জানুয়ারি ‘ইত্যাদি’, এবার নাতির সঙ্গে নেই নানি
নব্বই দশক থেকেই শিকড়ের সন্ধানে ইত্যাদি স্টুডিওর চার দেয়াল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তুলে ধরছে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রত্ননিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে ঐতিহ্য ও আর্থসামাজিক সম্ভাবনার জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির সামনে।
ইত্যাদির এ পর্বটি ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবারের ইত্যাদির বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফাগুন অডিও ভিশন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে পুরো ঠাকুরগাঁও জেলায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে বসে জমজমাট মেলা। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা, ছিল নাগরদোলাও। রানীশংকৈলে ধারণ হলেও দর্শকেরা আসেন ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর থেকেও।
বেলা তিনটা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হন অনুষ্ঠান দেখার জন্য।
ফলে দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দর্শকেরা হানিফ সংকেতকে দেখার জন্য বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়েন। ফলে অনুষ্ঠান ধারণের সুবিধার্থে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান ধারণ স্থগিত করা হয়, স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় কিছুক্ষণ পরেই আবার ধারণ শুরু হয়। অনুষ্ঠানস্থলে ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ লোক বেশি হওয়ার কারণে স্থানাভাবে অনেক দর্শকই আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনার ছাদ, রাস্তা, দেয়াল ও গাছের ওপর উঠে তীব্র শীত উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় ধরে উপভোগ করেছেন তাঁদের প্রিয় অনুষ্ঠানের ধারণ।
এবারের অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেছেন দুই প্রজন্মের কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী ও লিজা। গানটির কথা লিখেছেন লিটন অধিকারী রিন্টু। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কিশোর দাশ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতেই রয়েছে ঠাকুরগাঁওকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন রোহিত খান, কণ্ঠ দিয়েছেন তানজিনা রুমা, রাজীব, অয়ন চাকলাদার ও সানজিদা রিমি। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মেহেদী।
ঠাকুরগাঁওয়ের মঞ্চে এবার নাতিকে দেখা গেলেও দেখা যায়নি নানিকে। সাথিহারা নাতি কী করেছে এবারের ইত্যাদিতে, সেটাই দেখা যাবে অনুষ্ঠান প্রচারের দিন। এ ছাড়া ইত্যাদির নিয়মিত পর্ব চিঠিপত্র পর্ব ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে সামাজিক অসংগতি ও সমাজ সংস্কারের ওপর রয়েছে বেশ কিছু তীক্ষ্ণ তির্যক নাট্যাংশ।
জ্যোতিষের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, একালের বিবাহবার্ষিকীতে সেকালের উপহার, সময়ের বিবর্তনে ঘরোয়া ভাষার পরিবর্তন, সবজিবাজারে ঘোরগ্রস্ত ক্রেতা, চিৎকারসর্বস্ব উপস্থাপকের সাক্ষাৎকার, পারিবারিক শিক্ষা বনাম পারিপার্শ্বিক শিক্ষা, ইউটিউবের নেশায় বিপর্যস্ত পারিবারিক পরিবেশ, নিজের বেলায় ষোলো আনা, দিন যায় কথা থাকে, চাপা আতঙ্কসহ বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
অংশ নিয়েছেন আবদুল আজিজ, বাবুল আহমেদ, সুভাশিষ ভৌমিক, মোমেনা চৌধুরী, সোলায়মান খোকা, আবদুল্লাহ রানা, মাহফুজুর রহমান, আল মামুন, জিল্লুর রহমান, মাহমুদুল ইসলাম, কাজী আসাদ, মামুনুল হক, প্রাণ রায়, জয়রাজ, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, মুকিত জাকারিয়া, তারিক স্বপন, কামাল বায়েজিদ, বিলু বড়ুয়া, নিপু, আনোয়ার শাহী, জাহিদ শিকদার, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, সজল প্রমুখ। উল্লেখ্য, দর্শকপ্রিয় ইত্যাদি এ বছর পা রেখেছে তার ৩৭তম বছরে।