টাকা দেওয়ার শর্তে জামিন নিয়েও নায়িকার টাকা দেননি আজিজ

‘পাপ’ সিনেমাটি প্রযোজনার আংশিক টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় প্রযোজক আবদুল আজিজের নামে। গত (২৩ ফেব্রুয়ারি) রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত তাকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সিনেমাটির অভিনেত্রী জাকিয়া কামাল মুন।
টাকা ফেরত দেবেন, সেই শর্তে জামিন পেয়েছেন আবদুল আজিজ। তবে শেষ পর্যন্ত টাকা দেননি তিনি, বলে ফের অভিযোগ এনেছেন জাকিয়া কামাল মুন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে ‘পাপ’ সিনেমা নির্মাণে সহযোগিতার জন্য আজিজকে এককালীন ৬০ লাখ টাকা দেন মুন। ওই বছরের মার্চের মধ্যেই সিনেমার কাজটি শেষ করার কথা ছিল। অঙ্গীকারনামার শর্ত মোতাবেক আজিজ বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত দেননি। বারবার আইনজীবীর মাধ্যমে নোটিশ পাঠানোর পরও তিনি উপেক্ষা করেছেন।
জাকিয়া কামাল মুন জানান, গত নভেম্বর মাস থেকে প্রতি মাসে তাকে ১০ লাখ করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। মামলার পর গত ২ মার্চ ৩০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন আবদুল আজিজ। বাকি টাকাও ২৫ রোজার মধ্যে ফেরত দেবেন বলে দুপক্ষের আপোষ হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাকিয়া কামাল মুন দাবি করেন, আজিজ ভাইয়ের সঙ্গে আমার একটা আপোষনামা হয়েছে। গত রোববার (২ মার্চ) তিনি ৩০ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। অথচ রোববার আমার ফোনও ধরেনি কেউ। তিনি তো আদালতের কথাও শুনলেন না। দশ লাখ করে তিনটি তারিখে টাকা দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছে। সে প্রসঙ্গ তিনি বলেন, দশ লাখ করে দিলে তো নভেম্বর মাস থেকে দিতেন। সেটা তিনি করেননি।
প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে ৪০৬, ৪২০ ও ৫০৬ ধারায় মামলা করেন জাকিয়া কামাল মুন। এর প্রেক্ষিতে গত (২৩ ফেব্রুয়ারি) রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত আব্দুল আজিজকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। এ আদেশের পর ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন কোর্ট নং ৩৬-এ হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আজিজ। পাশাপাশি আদালতে জানান অভিনেত্রী মুনকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুই ভাগে ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করবেন, এমন শর্তেই ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম তার জামিন মঞ্জুর করেন।
অভিনেত্রীর আইনজীবী শিমুল জানান, পরে আজিজ বাদীকে হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ দেন যে ২ মার্চ ৩০ লাখ এবং আগামী ২৬ মার্চ আরও ২০ লাখ টাকা দেবেন। সেই তারিখ পার হয়ে গেলেও টাকা পরিশোধ করেননি আবদুল আজিজ। ওই তারিখে রাজধানীর ইস্কাটনে জাজের অফিসে ডেকে নেন অভিনেত্রীকে। কিন্তু টাকা দেওয়া তো দূরের কথা, ওই অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাকে। আদালতের রায় না মেনে আদালতের সঙ্গে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন আবদুল আজিজ।
এই আইনজীবী বলেন, আব্দুল আজিজ আদালতে লিখিত দিয়ে এসেছেন যে, প্রতি তারিখে ১০ লাখ টাকা করে ফেরত দেবেন। পরে বাদীকে মেসেজ করেছেন যে রোববার ৩০ লাখ এবং ২৫ রোজায় মধ্যে বাকি টাকা দেবেন। ১৯ মার্চ আরও একটা তারিখ আছে, দেখা যাক সেদিন তিনি কী করেন।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানাতে প্রযোজক আবদুল আজিজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি আলদাতের বিষয়, এ প্রসঙ্গে কোন বক্তব্য নেই।