ঘুমানোর আগে বই পড়লে আশ্চর্য উপকার

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা। কাজের পর যেটুকু সময় অবসর পাওয়া যায়, তার মধ্যে অনেকটা সময় আবার ব্যয় হয়ে যায় ইন্টারনেটের পেছনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রেখে শেষ হচ্ছে আধুনিক মানুষের এক একটা ব্যস্ত দিন।
দেখা যায়, সারা দিন কাজ শেষে বিছানায় ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সেই ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে, মেসেজ বা ই-মেইল টাইপ করে সময় কেটে যাচ্ছে সবার। এখন বেশির ভাগ মানুষই বলতে পারেন না যে শেষ কবে বই পড়েছিলেন!
যুক্তরাষ্ট্রের পিউ রিসার্চ সেন্টার এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, এক চতুর্থাংশ আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ গত এক বছরে কোনো বই পড়েননি।
এভাবে বই পড়ার প্রবণতা কমে যাওয়াটা বেশ লজ্জাজনক। যাদের নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস আছে, তাদের জীবনের সব পর্যায়ে মানসিক সক্ষমতা ভালো থাকে। এমনকি তাদের মনে রাখার ক্ষমতাও বাড়ে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত বই পড়ের তারা বক্তা হিসেবে ভালো হন, ভালো চিন্তা করতে পারেন, এমনকি তারা মানুষ হিসেবেও ভালো হন।
আপনি যদি ইনসোমনিয়ায় (অনিদ্রা) আক্রান্ত হন তাহলে বই হতে পারে আপনার ভালো বন্ধু। কারণ ২০০৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমানোর আগে বই পড়লে তা ইনসোমনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে আর আপনার ঘুম আসতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়, মাত্র ছয় মিনিট বই পড়লেই ৬৮ শতাংশ মানসিক চাপ কমে যায়। এই হার এক কাপ চা খেয়ে বা গান শুনে মানসিক চাপ কমানোর চেয়ে বেশি। এর ফলে মন পরিষ্কার হয় আর শরীর ঘুমের জন্য তৈরি হয়।
এর কারণ সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানী ও গবেষক ড. ডেভিড লুইস বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, একটি বই শুধু চিত্তবিনোদন ঘটায় না, বরং আপনাকে চিন্তার জগতে সক্রিয় করে রাখে। বই আপনাকে চেতনার অন্য একটি জগতে নিয়ে যায়।
ঘুমানোর আগে আপনি কার লেখা বই পড়ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বইটা সাহিত্য না বাস্তব ঘটনা নিয়ে লেখা সেটাও কোনো বিষয় নয়। যে কোনো ধরনের বই হলেই চলে।
কারণ যখন শব্দ নিয়ে তৈরি হওয়া বইয়ের জগতে মন ডুবে যায় তখন মাথা থেকে সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। মন শান্ত হয়ে যায়। ফলে ঘুমের জন্য তৈরি হয়ে যায় আপনার শরীর।