ফারনাজ আলম মেকওভার
সমুদ্র ও সুইমিংপুলে গোসল, ত্বক রক্ষার প্রস্তুতি
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/09/13/photo-1442132060.jpg)
অনেকেই ঘুরতে যাওয়ার জন্য সমুদ্রকে বেছে নেয়। সমুদ্রের পানিতে ভিজতেও ভালো লাগে আবার পাড়ে বসে থাকতেও ভীষণ পছন্দ সবার। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয়, যখন আপনি ফিরে আসেন। চেহারা আর আগের মতো থাকে না। কালচে একটা ভাব দেখা যায়। যা সহজে যেতে চায় না। আবার অনেকেরই সুইমিংপুলে গোসলের শখ থাকে। কিন্তু সেখানেও একই বিপদ। কারণ সুইমিংপুলের পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ক্লোরিন ব্যবহার করা হয়। এ ক্লোরিন মানুষের ঘাম, প্রসাধনী, ত্বকের কোষের সঙ্গে মিশে এক ধরনের কেমিক্যাল তৈরি করে। তা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। আর দেখবেন, সুইমিং পুলের পানিতে ভেজার পর সঙ্গে সঙ্গেই ত্বক কালো হয়ে যায়। তাই বলে সুইমিংপুলের পানিতে নামব না? তা কী হয়? এ ক্ষেত্রে সুইমিং পুলে অথবা সমুদ্রে নামার আগে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। আর এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিউটি এক্সপার্ট ফারনাজ আলম।
ফারনাজ আলম কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো থেকে ত্বক বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। কানাডায় থাকার সময় ম্যাক কসমেটিকসের সঙ্গে বেশ কিছুদিন কাজও করেছেন তিনি। সেখানে ডার্মাটোলজিতেও কোর্স করা আছে ফারনাজের। এরপর লন্ডনের নর্থ আম্বরিয়া ও মালয়েশিয়ার টেইলোরস থেকে আর্কিটেকচারের ওপর দুটি ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি অ্যাসথেটিকসের ওপর পড়াশোনা করেন, যা ২০১১ সালে শেষ করেন। বর্তমানে মায়ের প্রতিষ্ঠানে ডিরেক্টরের আসনে রয়েছেন। বিশ্বের ১০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ল’রেল কন্টেস্টে ফাইনালিস্ট হয়েছেন ফারনাজ আলম। বর্তমানে ল’রেল প্যারিসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে রয়েছেন তিনি।
সুইমিংপুলের পানিতে এবং সমুদ্রের পানিতে ত্বক যেন কালো না হয় এ জন্য বিউটি এক্সপার্ট ফারনাজ আলমের পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন :
ত্বকের কালচে ভাব থেকে রক্ষা পেতে সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশনই একমাত্র উপায়। তবে পানিতে নামার আগে বুঝেশুনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। আবার অনেকের ধারণা, পানিতে নামলেই তো সানস্ক্রিন উঠে যাবে। তাই অযথা সানস্ক্রিন ব্যবহার করে কোনো লাভ নেই। আর এখানেই আপনারা ভুল করেন। কারণ সানস্ক্রিন ছাড়া সমুদ্রের নোনা পানি এবং সুইমিংপুলের ক্লোরিনযুক্ত পানি ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে। আর এই দাগ দূর করতে কয়েকবার আপনাকে ফেসিয়াল করতে হয়। তবে ফেসিয়াল করে ত্বকের কালচে ভাব দূর হলেও ত্বক কিছুটা কুচকে যায়। তাই এ ধরনের পানিতে নামার আগে সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ওয়াটার প্রুফ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। যাতে পানিতে নষ্ট না হয়। পানিতে নামার অন্তত ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। না হলেই এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না।
সমুদ্রে ঘুরতে গেলে টুকটাক মেকআপ তো আমরা সবাই করি। আর বলতে গেলে বেইজ মেকআপ এ সময় আপনার ত্বককে রক্ষা করবে। মুখে যদি আপনি হালকা বেইজ মেকআপ করে নেন তাহলে বালু মুখে বসবে না। না হলে ত্বকের কোষের মধ্যে ধুলাবালু প্রবেশ করে ব্রণ হতে পারে। কারণ ঘুরতে গেলে আমরা সঠিক উপায়ে ত্বক পরিষ্কার করতে ভুলে যাই। আর এ কারণেই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। তবে পানিতে নামার আগে ওয়াটার প্রুফ মেকআপ বেছে নিন।
বেইজ মেকআপের ক্ষেত্রে ওয়াটার বেইজ লিকুইড ফাউন্ডেশন বেছে নিন। প্রথমে হাতের ওপর সামান্য লিকুইড ফাউন্ডেশন নিয়ে ব্রাশ দিয়ে বেইজ করে নিন। ফাউন্ডেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাফিং ব্রাশটাই ভালো। ব্রাশ দিয়ে এমনভাবে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করে দিন যাতে ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়। এতে মুখ অনেকটা স্বাভাবিক লাগবে এবং মেকআপের বেইজটাও ভালো হবে। পাফ ভিজিয়ে মুখে হালকাভাবে প্যানকেক দিয়ে বেইজটা ভারী করে নিন। এতে মেকআপটা ভালোভাবে সেট হবে। পুরো মুখে প্যানকেক হালকা চেপে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। এরপর ত্বক অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সানস্ক্রিন শুধু মুখে লাগালেই হবে না। হাত ও পায়েও ভালোভাবে লাগাতে হবে। না হলে কালো হয়ে যাবে। চোখে কোনো মেকআপ না দেওয়াই ভালো। চাইলে ওয়ারটার প্রুফ কাজল বা লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। কারণ সমুদ্রে অনেকই থাকে। আর ছবির বিষয়টাও একবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। একটু পরিপাটি তো থাকতেই হবে কী বলেন? না হলে পরে ছবি দেখে আফসোস করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। স্কিন কালারের লিপস্টিক দিতে পারেন। আর বড় চুল হলে বেঁধে নিন। ছোট চুল খোলা রাখলেও সমস্যা নেই। এ ক্ষেত্রে চাইলে একটি রঙিন ক্যাপ করতে পারেন মাথায়। এতে অনেক বেশি স্টাইলিশও লাগবে আবার রোদ থেকেও বাঁচবেন।
পোশাকের ক্ষেত্রে পশ্চিমা পোশাকই বেছে নিন। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। এ ক্ষেত্রে টি-শার্ট ও থ্রি-কোয়াটার প্যান্ট বেছে নিতে পারেন। না হলে পানিতে নেমে বড় কাপড় পেঁচিয়ে যেতে পারে।
পানিতে ভেজার পর অবশ্যই ভালো করে গোসল করতে হবে। হালকা ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। এবার ক্লিনজার দিয়ে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। হাত পায়েও ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। চুলে ভালো করে শ্যাম্পু করুন। কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। গোসল শেষে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।