শিশুদের মনের বিকাশে যেভাবে সাহায্য করে ‘লুকোচুরি খেলা’

অনেকেই হয়তো ছোটবেলায় টুকি বা লুকোচুরি খেলেছেন। কাউকে হারিয়ে ফেলে আবার খুঁজে পাওয়ায় যে আনন্দ, তা এই খেলা দিয়েই বোঝা যেত! কিন্তু জানেন কি, সামান্য ওই খেলার মাধ্যমেই আপনার সন্তানের মস্তিষ্ক বিকাশের সুযোগ পেয়েছে? তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজের সন্তানের সঙ্গেও টুকি বা লুকোচুরি খেলবেন। চিকিৎসকরা অভিভাবকদের শিশুদের সঙ্গে ‘পিকাবু’ খেলার পরামর্শ দেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কী কারণে বাচ্চাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা উচিত।
– অনেক শিশুর মধ্যে দেখা যায়, সামাজিক পরিসরে ঠিকভাবে মিশতে পারছে না। না তারা কথা বলে, না হাসালে হাসে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক এই খেলাটি খেলার পরামর্শ দেন। এর ফলে অন্য একটি মানুষের সঙ্গে বোঝাপড়া করে, সমন্বয় রেখে চলার প্রশিক্ষণ হয়। এই খেলা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে পারে।
– টুকি খেলতে খেলতে শিশুর মনে বিস্ময় তৈরি হতে থাকে। সে বোঝার চেষ্টা করে, সামনের মানুষটি কী করবেন এরপর। অন্যের মন বুঝে চলার ক্ষমতা তৈরি হয় শিশুদের মধ্যে। এর মাধ্যমে অনেক সময়ে নিজেকে অন্যের জায়গায় বসিয়ে ভাবার চেষ্টাও করে শিশুরা। তাই এই খেলা খুবই উপকারী।
– ৩. কোনো বস্তু, কোনো মানুষ চোখের সামনে না থাকলেও তারা যে ফিরে আসতে পারে, এই ভরসার জায়গা তৈরি করা দরকার শিশুদের মনে। মা-বাবা কাজে গেলেও চিন্তার কিছু নেই, তাঁরা ঠিক ফিরে আসবেন, এই ধারণা তৈরির জন্য টুকি বা লুকোচুরির মতো খেলা খুব প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের বিবাহবিচ্ছেদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই ধরনের খেলা সাহায্য করে। শিশুদের মনে আস্থা তৈরি হয়। আলাদা হয়ে যাওয়া নিয়ে আতঙ্ক কমাতে পারে লুকোচুরি বা টুকি খেলা।
চিকিৎসকরা বলছেন, অন্য মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা বা অন্যকে খুশি করার চেষ্টা করা, বা অন্যকে কষ্ট না দিয়ে কথা বলা, এই ধরনের আচরণ তৈরি করার জন্য পিকাবুর মতো বিভিন্ন খেলাধুলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন রোগীদের। যে শিশুদের কথা বলার সমস্যা রয়েছে, বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার, তাদের জন্য এই খেলা বেশি কার্যকরী।