ফুটবলে ‘নতুন বসন্ত’ হেমন্ত বিশ্বাস
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/03/photo-1422975445.jpg)
২০১৩ সালের কথা। হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস খেলতেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। সে সময় তাঁর খেলা নজর কাড়ে লোডভিক ডি ক্রুইফের। হেমন্তকে নেদারল্যান্ডসের প্রথম বিভাগের ক্লাব এফসি টোয়েন্টাতে ‘ট্রায়ালে’ অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেন তিনি। বাংলাদেশ দলের ডাচ কোচ সেদিন হয়তো খুঁজে পেয়েছিলেন ভবিষ্যতের এক তারকাকে।
নেদারল্যান্ডসের ক্লাবটিতে খেলার সুযোগ পাননি হেমন্ত। কিন্তু ক্রুইফের ‘জহুরি-চোখ’ যে মিথ্যা ছিল না, তা ঠিকই প্রমাণ করেছেন দিনাজপুর থেকে উঠে আসা এই মিডফিল্ডার। কোচের আস্থারও প্রতিদান দিয়েছেন, গত বছরের মার্চে গোয়ায় ভারতের বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচে অভিষেকেই মাঠে ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়ে।
এর পর থেকেই জাতীয় দলের নিয়মিত একাদশে তিনি। দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এবার নতুন এক হেমন্তের দেখা পেল বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। শুধু আক্রমণের পেছনের কারিগর হয়ে থাকেননি, গোল করে দলকে জয়ও এনে দিলেন। সোমবার হেমন্তর এক অসাধারণ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
অনেক দিন বাংলাদেশের ১০ নম্বর জার্সিটা ছিল জাহিদ হাসান এমিলির অধিকারে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এই জার্সি হেমন্তকে দিয়েছেন ডি ক্রুইফ। ফুটবলারদের সবচেয়ে আরাধ্য জার্সি পেয়ে হেমন্ত একই সঙ্গে উল্লসিত ও সতর্ক, ‘ডি ক্রুইফ যে ভালোবেসে জার্সিটা আমাকে দিয়েছেন তা কিন্তু নয়। এই জার্সিটা পেয়ে আমার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। ভালো লাগছে কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে।’
তবে এই একটি ম্যাচের পারফরম্যান্সেই দায়িত্ব শেষ নয় বলে মনে করেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে খেলা হেমন্ত, ‘সামনে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, আরো অনেক পরিশ্রম করতে হবে, আরো ভালো কিছু করতে হবে। তাহলেই সম্ভব দেশের জন্য কিছু একটা করা।’
১৮ বছর বয়সী হেমন্তের প্রশংসায় ডি ক্রুইফ পঞ্চমুখ। প্রিয় শিষ্য সম্পর্কে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, ‘হেমন্তর মতো ফুটবলারের ওপর নির্দ্বিধায় আস্থা রাখা যায়। দলকে অনুপ্রাণিত করার দারুণ ক্ষমতা আছে তাঁর। আমার বিশ্বাস সে অনেক দূর যাবে।’
সেদিন ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কার সার্বিয়ান কোচ নিকোলা কাভাজোভিচও মেতে ওঠেন হেমন্ত-বন্দনায়, ‘তার গোলটি সত্যিই অসাধারণ। খেলা দেখলে বোঝাই যায় না তার এত অল্প বয়স। সে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ মামুনুল।’
বাংলাদেশের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম এ মুহূর্তে দেশের সেরা মিডফিল্ডার। প্রতিপক্ষ কোচের দরাজ ‘সার্টিফিকেট’ হেমন্তকে আবার চাপে না ফেলে দেয়!