‘নিয়ন্ত্রকদের আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না’

সুবিধা না পেলে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে কেন আসবে এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুপালী হক চৌধুরী বলেন, আমাদেরকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে। তাহলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিগুলো লাভবান ও সুবিধা পাবে। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না। তবে অনিয়মের রিপোর্ট তৈরির অডিট ফার্মের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।
আজ রোববার (২৩ মার্চ) রাজধানীর পল্টনস্থ ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত সিএমজেএফ টকে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএম সভাপতি গোলাম সামদানি ভুইয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন সিএমজেএম সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
তালিকভুক্ত কোম্পনিগুলো প্রকৃত খেলাপি ঋণ না দেখিয়ে আর্থিক প্রতিবেদনে অনেক কম দেখাচ্ছে, এদের কাজের সহায়তা করছে সিএ ফার্ম। এই ফার্মের জবাবদিহিতার জায়গা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রুপালী হক বলেন, করাপশন ক্যান নট হ্যাপেন, ইফ ইট ডাজ নট হ্যাভ দ্য ব্লেসিং অফ দ্য রেগুলেটরি বডি (নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না)। যে অডিট ফার্ম এ ধরনের (অনিয়মের) রিপোর্ট করেছে তার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। আমাদের উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। যারা এ ধরনের দুর্নীতি করে তাদের কিছু না কিছু শাস্তি পেতে হবে।
বন্দরের চার্জসহ সব ধরণের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো ঠিক হবে না জানিয়ে রুপালী হক বলেন, এখন এই শুল্কগুলো বাড়ানো হলে ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো ধরনের মূল্যষ্ফীতির চাপ নিতে পারবে না। শুল্ক বাড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ করছি আমরা বিএপিএলসি থেকে। তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত হলে যদি ভাল সুবিধা না পায় তাহলে কেন তারা আইপিওতে (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) আসবে। ব্যাংক থেকেই মূলধন সংগ্রহ করবে।
বিএসইসি মন্ত্রণালয়ের কাছে জনবল চেয়েছে এটা কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নে রূপালী হক চৌধুরী বলেন, বিএসইসি আমাদের অভিভাবক। তারা যেহেতু সংস্কার করছেন, ওনারা যদি কোনো কিছু করতে চান, আমার মনে হয় ওনাদের বক্তব্যটাই নেয়া উচিত। তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অনভিপ্রেত। এখন তারা যদি এটাকে ঢেলে সাজাতে চান, যার ফলে ভাল কিছু দিতে পারবেন, এটার কারণ তারাই বলতে পারবেন। আমরা এটাই বলি, সংস্কার করে ওনারা যদি ভাল কিছু আনতে পারেন, আমরা তাতে স্বাগত জানাই।
রুপালী হক বলেন, আমি নিজে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছি। কয় পয়সা বেতন দিয়েছি? কিছুই দেয়নি। তাহলে এখন আমাদের দায়িত্ব কি? দেশকে ফিরিয় দেয়া এবং সেই কাজটি আমাদের সবাইকে করতে হবে। যে করবে না, তাকে শাস্তি পেতে হবে। আরও বলেন, আমাদের ছোট বেলায় দেখেছি আমাদের শিক্ষকরা রেসপেক্টেড ছিল, একজন ভালো ডাক্তার রেসপেক্টেড ছিল। আমাদের ওই সমাজে ফিরে যেতে হবে। যদি দরকার হয় সারা বাংলাদেশের বাঙালীদের রক্ত ট্রান্সমিশন করে ফেলতে হবে। ট্রান্সমিশন দিয়ে ঠিক করতে হবে, আমরা দুর্নীতিগ্রস্থ হবো না, আমরা ভালো মানুষ হবো।
আমরা বেশিরভাগ সত্যিকার অর্থে ভালো থাকতে চাই জানিয়ে রুপালী হক বলেন, কিন্তু অল্প কিছু ব্যক্তির দ্বারা আমরা ডিফাইন (চিহ্নিত) হচ্ছি। এটা ঠিক না। আমরা বেশিরভাগ মানুষ সৎ থাকতে চাই, আমরা ধর্মভীরু, আমরা ভালো কাজ করতে চাই। কিছু একটা জায়গায় পড়ে আমরা কেমন যেন হতবিহ্বল হয়ে যাচ্ছি। এখন সময় জেগে ওঠার। এটা আমার, আপনার সকলের কাজ। আমরা সবাই মিলে দেশটাকে পরিবর্তন করবো, অবশ্যই।