মেয়েদের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

মেয়েদের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেই চলে এসেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আবহ। ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল জাপান-ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি। ফাইনালে দেখা দুই জয়ী দল জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের। শিরোপা জয়ের অন্তিম লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার পর ১৯৪০-এর দশকের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কথা আরো বেশি করে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সমর্থক। মেয়েদের বিশ্বকাপে জাপানের বিপক্ষে জয়টাকে অনেকেই তুলনা করছেন পার্ল হারবারে জাপানি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এখন সবচেয়ে বেশি ঘুরছে ‘পার্ল হারবার’।
২০১১ সালের বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল জাপান। এবার সেই ফাইনালেই জাপানকে ৫-২ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিশোধ নিয়েছে গত আসরে হারের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সমর্থক প্রতিশোধের ব্যাপারটি টেনে নিয়ে গেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। ক্লয়েড রিভার্স নামের একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘হেই জাপান, এটা পার্ল হারবারের জন্য।’ টুইটারে এটাকে সমর্থন বা ফেভারিট করে রেখেছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। বার্তাটি পুনরায় টুইট হয়েছে সাড়ে আট হাজার।
১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে বিমান হামলা চালিয়েছিল জাপান। পরে যুক্তরাষ্ট্র সেটার জবাব দিয়েছিল পারমাণবিক বোমা হামলা করে। কিন্তু এতদিন পর ফুটবলের মাঠে জাপানকে পরাস্ত করার পর সেই পার্ল হারবার হামলার কথাই টেনে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সমর্থক। শন গার্সিয়া নামের আরেকজন টুইটারে লিখেছেন, ‘তারা পার্ল হারবার ধ্বংস করেছিল। আমরা তাদের স্বপ্ন ধ্বংস করেছি।’
কেউ কেউ আবার কঠোর সমালোচনাও করেছেন উগ্র জাতীয়তাবাদী মনোভঙ্গির। পার্ল হারবারে হামলার জবাব দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে পারমাণবিক বোমা হামলা চালিয়েছিল, সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘পার্ল হারবার? আমার তো মনে হয়, পারমাণবিক বোমা মেরেই আমরা সেটার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলাম।’
টেলর পেরি নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘পার্ল হারবার হাসির কিছু না। হিরোশিমা হাসির কিছু না। নাগাসাকি হাসির কিছু না। এটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ না। এটা ২০১৫ সালের মেয়েদের একটা ফুটবল ম্যাচ মাত্র।’ আরেক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘বোম্বিং, পার্ল হারবার আর জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য কখনোই হাস্যকর কিছু না। এগুলো বাদ দিয়ে আমরা কেন শুধু একটা খেলা উপভোগ আর উল্লাস করতে পারি না?’