লজ্জার হারে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভালো ক্রিকেট খেলে জিততে চায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন এমনটাই বলেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ন ভিন্ন। ভালো করা তো দূরে উল্টো তিন বিভাগের ব্যর্থতায় লজ্জার হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে এশিয়া কাপকে পাখির চোখ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতেই গলদ। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারের স্বাদ দিল লঙ্কানরা। এমন হারে স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক সাকিবের আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৬৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। জবাবে নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখিয়ে ৩৯ ওভারেই ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।
১৬৫ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অবশ্য মন মতো হয়নি স্বাগতিকদের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে অসাধারণ এক ইনসুইংয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার দিমুথ করুনারত্নকে বোল্ড করেন তাসকিন। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন করুনারত্নে। তাসকিনের পর আঘাত হানেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম।
দলীয় ১৫ রানের মাথায় নিশানকাকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন শরিফুল। এরপর সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস। তবে দলীয় ৪৩ রানে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিস। তার বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়লেও তা বেশ ভালোভাবে সামাল দেন আসালাঙ্কা ও সামারাবিক্রমা। এই দুই ব্যাটার বাংলাদেশের বোলারদের শাসিয়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন।
৭৭ বলে ৫৪ রান করে শেখ মেহেদীর বলে সামারাবিক্রমা ফিরলেও আরেক ব্যাটার আসালাঙ্কা ঠিকই ক্রিজে টিকে ছিলেন। অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে সঙ্গী করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। এই জয়ে সুপার ফোরে এক পা দিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কার খর্ব শক্তির বোলিং লাইনআপের সামনে টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ হলো। ৩৬ রানে তিন উইকেট পড়ার পর লড়াই করার মতো সামর্থ্য দেখিয়েছেন শুধু তাওহীদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৯ রান যোগ করেন তারা।
তারপর মুশফিক শান্তর কিছুক্ষণের সঙ্গী হলেও আদতে ওই জুটি ভাঙাই কাল হয়ে দাঁড়ায় লাল-সবুজদের। লঙ্কানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রানই তুলতে পারছিল না। এই চাপ কাটাতে গিয়েই বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। চাপের মুহূর্তে একার লড়াইয়ে শুধু শান্তই সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ (নাঈম ১৬, তামিম ০, শান্ত ৮৯, সাকিব ৫, হৃদয় ২০, মুশফিক ১৩, মিরাজ ৫, মেহেদি ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ২, মোস্তাফিজ ০ ; রাজিথা ৭-০-২৯-০, থিকসানা ৮-১-১৯-২, ধনঞ্জয়া ১০-০-৩৫-১, পাথিরানা ৭.৪-০-৩২-৪, দুনিথ ৭-০-৩০-১, দাসুন ৩-০-১৬-১)।
শ্রীলঙ্কা: ৩৯ ওভারে ১৬৫/৫ (নিশানকা ১৪, করুনারত্নে ১, মেন্ডিস ৫, সামারাবিক্রমা ৫৪, আসালাঙ্কা ৬২*, ধনঞ্জয়া ২, শানাকা ১৪* ; তাসকিন ৭-১-৩৪-১, শরিফুল ৪-০-২৩-১, সাকিব ১০-২-২৯-২, মোস্তাফিজ ৩-০-১২-০, মিরাজ ৫-০-২৬-০, মেহেদী ১০-০-৩৫-১)