প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়ালের ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা

বদলে যাওয়া দেশের ফুটবলের জার্সি গায়ে জড়ানো স্বপ্ন এখন হাজারও তরুণের মাঝে। লাল-সবুজের জার্সিতে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার আকাঙ্খা চেপে বসেছে তাদের মধ্যে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রবাসে থাকা ফুটবলারদের মধ্যেও সেই স্বপ্নের ছোঁয়া লেগেছে। সেজন্য ছুটে এসেছেন বাফুফের ট্রায়ালে। কিন্তু এর ফলাফল ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আজ শনিবার (২৮ জুন) জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাফুফের ‘বিএফএফ নেক্সট গ্লোবাল স্টার’ ট্রায়াল। চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন ১৪ দেশ থেকে আসা ৪৮ জন ফুটবলার। যাদের বয়স ১৪ থেকে ২৭ বছর। ট্রায়াল শেষে তাদের মধ্য থেকে বাছাই করা হবে সম্ভাবনাময়ী ফুটবলারদের।
বাফুফের এমন উদ্যোগ বেশ আশাব্যঞ্জক। দেশের ফুটবলের জন্য এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে। কিন্তু আলোর নিচেই যেনো অন্ধকার লুকিয়ে আছে। তিন দিনের এই ট্রায়ালের চূরান্ত ফলাফল আদৌ প্রকাশিত হবে কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
সেই ধোঁয়াশা রেখেছেন বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম নিজেও। গতকাল সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের টেকনিক্যাল বিভাগ খেলোয়াড়দের তথ্য ও ভিডিও সংরক্ষণ করবে। কোচদের যখন প্রয়োজন হবে, তখন তারা সেই ডেটার ভিত্তিতে খেলোয়াড়দের ডেকে নেবেন।’
বাফুফের তিনদিনের এই ট্রায়ালের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু। তার অধীনে গঠিত মূল্যায়ন কমিটিতে আছেন ঢাকা আবহনীর কোচ মারুফুল হক ও মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ। দেশে না থাকলেও জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ভিডিও ফুটেজ ও বিশ্লেষণ রিপোর্টের ভিত্তিতে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স পর্যবেক্ষণ করছেন।
ট্রায়ালে আসা সব ফুটবলারদের নিজেকে প্রমাণ করতে পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে চায় বাফুফে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া সব ফুটবলার ৬০ মিনিট করে মাঠে থাকার সুযোগ পাবেন। শেষদিনে (৩০ জুন) খেলোয়াড়দের ভাগ করে পূর্ণাঙ্গ একটি ম্যাচ খেলানো হবে। এই ম্যাচটি উন্মুক্ত থাকবে সাংবাদিক, ক্লাব প্রতিনিধি ও খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যদের জন্য।
বাফুফের দেওয়া তথ্য মতে, এখান থেকে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে যাদের পারফরম্যান্স ভালো হবে তাদের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়া ঘরোয়া ক্লাবগুলোতে খেলার সুযোগ পাবেন তারা।
ট্রায়ালে সবচেয়ে বেশি ফুটবলার অংশ নিয়েছেন ফুটবলের আঁতুড়ঘর খ্যাত ইংল্যান্ড থেকে। ইংলিশ ভূমি থেকে এসেছেন ২০ জন ফুটবলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ জন ফুটবলার এসেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সুইডেন থেকে পাঁচজন এবং দুই ফুটবলার এসেছেন কানাডা থেকে। এছাড়া ইতালি, বেলজিয়াম, ওয়েলস, ফিনল্যান্ড, মালয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া- এই ১১টি দেশ থেকে একজন করে ফুটবলার এসেছেন ট্রায়ালের জন্য।
এসব দেশের ফুটবলের অবকাঠামো বাংলাদেশের চেয়ে বেশ উন্নত। সেই অবকঠামোতেই বেড়ে উঠেছেন তারা। ফলে তাদের অনেকের মধ্যেই পেশাদারিত্ব ও আধুনিক ফুটবলের ছাপ রয়েছে। তরুণ এসব ফুটবলারের আগমণে দেশের ফুটবলেও বইছে নতুন বাতাস। কিন্তু সেই বাতাসে পাল উড়িয়ে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়া নির্ভর করছে ফেডারেশনের পরিকল্পনা ও স্বচ্ছতার ওপর।