ফিলিস্তিনি শিশুদের নিয়ে উয়েফার বার্তা- ‘শিশু ও বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করো’

ইতালির উদিনেতে ব্লুনার্জি স্টেডিয়ামে উয়েফা সুপার কাপের ম্যাচে গতকাল রাতে পিএসজির মুখোমুখি হয় টটেনহাম। তবে ম্যাচ শুরুর আগে এক আবেগঘন বার্তা প্রদর্শন করে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। ম্যাচ শুরুর আগে দুই দলের খেলোয়াড়রা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালে তাদের সামনে একটি বড় ব্যানার তুলে ধরা হয়। সেখানে লেখা ছিল ‘শিশু হত্যা বন্ধ করো, বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করো।’ ব্যানার প্রদর্শনের ছবি উয়েফার এক্স হ্যান্ডল থেকেও পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘বার্তাটা জোরালো ও পরিষ্কার।’
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিনের সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দুজন শরণার্থী শিশু সেখানে ছিল। ১২ বছরের তালাহ নামের এক মেয়ে, যাকে যুদ্ধের কারণে চিকিৎসার জন্য ইতালির মিলানে আনা হয়েছে এবং ৯ বছরের মোহাম্মদ, যে গাজায় বিমান হামলায় তার বাবা-মাকে হারিয়েছে।
এছাড়া খেলার শুরুতে টিমের লাইন-আপের সময় ব্যানার ধরেছে ইতালিতে আশ্রয় নেওয়া নয় জন শিশু। যারা আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া, প্যালেস্টাইন ও ইউক্রেনের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে এসেছে।
এই ব্যানার প্রদর্শনের এক দিন আগে উয়েফা ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন যুদ্ধক্ষেত্রের শিশুদের সহায়তার জন্য নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করে। এই ফাউন্ডেশনের অংশীদার ইন্টার ক্যাম্পাসের সহায়তায় এসেছে এই নয়জন শিশু। ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো গাজার শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশপাশি সংঘাতপ্রবণ এলাকার শিশুদের জন্য কাজ করছে।
উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, খেলার আগে, মাঝে বা পরে স্টেডিয়ামে কোনো রাজনৈতিক বার্তা প্রদর্শন করা যাবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, সুপার কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের মতো সংঘাতপূর্ণ জায়গা থেকে শিশুদের নিয়ে এসেছে উয়েফা। তবে ব্যানারে নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চল বা দেশের যুদ্ধ উল্লেখ করা হয়নি।
এই ঘটনার কিছুদিন আগে ফিলিস্তিনি ফুটবলার সুলাইমান আল-ওবেইদের মৃত্যুর খবর নিয়ে উয়েফা একটি পোস্ট শেয়ার দেয় এক্স-এ। লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবল তারকা মোহাম্মদ সালাহ সেটি নিয়ে উয়েফার সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ফিলিস্তিনি ফুটবলার সুলাইমান আল-ওবেইদের মৃত্যুর খবর দেওয়ার সময় উয়েফা বলেনি, তিনি কীভাবে ও কোথায় মারা গেছেন।
ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ৪১ বছর বয়সী ওবেইদ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। ওবেইদকে বলা হতো ‘ফিলিস্তিনি পেলে’। তিনি ২৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুটি গোল করেন, এছাড়া ক্যারিয়ারে করেছেন শতাধিক গোল।
সালাহ উয়েফার দেওয়া পোস্টটি শেয়ার দিয়ে তাদের প্রশ্ন করেন, ‘তাকে কে হত্যা করল, কোথায় মারা গেল, আর কেন মারা গেল?’