সেই লর্ডসে ২৭ বছরের অপেক্ষা ঘুচলো দক্ষিণ আফ্রিকার

লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রোমাঞ্চ গড়ালো শেষ ওভারে। সিরিজ বাঁচাতে শেষ ওভারে ইংলিশদের দরকার ছিল ১৬ রান। শেষ ব্যাটার হিসেবে জোফরা আর্চারের সঙ্গে উইকেটে ছিলেন পেসার সাকিব মেহমুদ। তৃতীয় ও পঞ্চম বলে দুটি চার মেরে সমীকরণ বাঁচিয়ে রেখেছিলেন আর্চার। শেষ বলে মারতে হতো ছক্কা। তবে সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি তিনি। ৫ রানে জিতে ২৭ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষ করল প্রোটিয়ারা।
গতরাতে লর্ডসে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান তুলতে পেরেছে ইংল্যান্ড। ৫ রানের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
দীর্ঘ ২৭ বছর পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে ইংলিশ ভুখণ্ডে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল প্রোটিয়ারা। তিন ম্যাচের সেই ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল প্রোটিয়ারা। তখনও প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছিল তারা। ওভালে প্রথম ওয়ানডেতে জিতেছিল ৩ উইকেটে। ম্যানচেস্টারে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ছিল ৩২ রানে।
এর আগে সেমিফাইনালে হারতে চোকার্স তকমা পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা চলতি বছর এই লর্ডসেই অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে হারিয়ে ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবার আইসিসি ট্রফি জিতেছিল।
রান তাড়ায় নেমে প্রথম বলেই ফেরেন ওপেনার জেমি স্মিথ। দ্রুতই ফেরেন আরেক ওপেনার বেন ডাকেটও (৩৩ বলে ১৪ রান)। শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন জো রুট আর জ্যাকব বেথেল। তবে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর বেশি দূর এগুতে পারেননি কেউই। রুট ফেরেন ৭২ বলে ৬১ রান আর বেথেল ৪০ বলে ৫৮ রানে।
একই ধারায় ইনিংস বড় করতে পারেননি হ্যারি ব্রুক (৪০ বলে ৩৩), জস বাটলার (৫২ বলে ৬১), উইল জ্যাকসও (৩৩ বলে ৩৯)। ইংল্যান্ডের শেষ বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে উইল জ্যাকস যখন ফেরেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ৮ উইকেট ২৯০। ১৯ বলে ইংলিশদের দরকার ছিল ৪১ রান। শেষ ওভারে সেটা দাঁড়িয়েছিল ১৬ রানে। কিন্তু আশা দেখালেও সমীকরণ মেলাতে পারেননি আর্চার। ১৪ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন আর্চার।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনিং জুটিতে ৭৩ রান তুলেছিল দুই ওপেনার রায়ান রিকেল্টন আর এইডেন মার্করাম। ৩৩ বলে ৩৫ রান করে রিকেল্টন ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। এরপর দ্রুতই ফেরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (৭ বলে ৪)। ৬৪ বলে ৪৯ রান করে মার্করামও বিদায় নেন চার ওভার পরই।
এরপর শক্তহাতে দলের হাল ধরেন ম্যাথিউ ব্রিটজকে আর ট্রিস্টান স্টাবস। চতুর্থ উইকেটে ১৪৭ রানের বিশাল জুটি গড়ে দলকে বড় স্কোরের দিকে নিয়ে যান দুজন। ৭৭ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন ব্রিটজকে। আর শেষদিকে ডেভাল্ড ব্রেভিসের ২০ বলে ৪২ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩০ রানে।