মিয়ানমারে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের ছয় মাস পর মিয়ানমার এখন নভেল করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিপর্যস্ত। গত ২৫ মে থেকে শুরু হওয়া করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৩ জুলাই দেশটিতে করোনায় ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত মিয়ানমারে করোনভাইরাসে মারা গেছে ছয় হাজার ৪৫৯ জন। সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারে ১৩ হাজার ৪৮৭টি নমুনার মধ্যে পাঁচ হাজার ৫০৬টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৪০ শতাংশ। তবে, প্রকৃত সংখ্যা বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই হাসপাতালে যেতে পারছে না।
মিয়ানমারের সমাধিস্থলগুলো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই দ্রুত মরদেহ সমাধিস্থ করতে হিমশিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত লাশ বহনের গাড়ি না থাকায় ট্যাক্সি বা গাড়িতে করে তিনটি বা তার চেয়ে বেশি লাশ বহন করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে—ইয়াঙ্গুনের কবরস্থানে সৎকারের জন্য মৃতদেহগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মীরা মাস্ক ছাড়া অন্য কোনো সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম পরেন না। ইয়াঙ্গুনের সৎকারকর্মী এবং ত্রাণকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, দিনে প্রায় এক হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এত মৃতদেহ সৎকার করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সান উইন থান নামের এক ব্যক্তির দাতব্য পরিষেবা মরদেহ পরিবহণ করে। তিনি জানান, তাঁর সংস্থাকে প্রতিদিন অন্তত ৪০টি মরদেহ কবরস্থানে পরিবহণ করতে হয়। তবে, তাঁরা অনেক অনুরোধই রাখতে পারছেন না।
সান উইন থান বলেন, ‘আমরা দিনে ৫০টির বেশি মৃতদেহ নিতে পারি না। মৃতদেহগুলো কবরস্থানে রেখে আসার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তবে, চাহিদা বেশি থাকায় আমরা এর চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে পারি না। কবরস্থানে মৃতদেহ পৌঁছে দিয়েই আরও মৃতদেহ নিয়ে আসার জন্য চলে যেতে হয়।’
শুধু ইয়াঙ্গুনের পরিস্থিতিই এমন নয়। মান্দালয়ে চিকিৎসক ও সেবিকার অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
একজন ত্রাণকর্মী বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ৬০ জন রোগী মারা যায়। কিন্তু, আমরা কেবল ৩০টি মৃতদেহ কবরস্থানে নিতে পারি।’