রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৪৯তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের ফলে জনসমাগমের ওপর ইতালি সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সীমিত আকারে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রাজীব ত্রিপুরার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরিকল্পিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন, দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক ও ইতালির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সম্মানিত নাগরিকদের জন্য অভ্যর্থনার আয়োজন। করোনাভাইরাসের কারণে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব না হলেও অবস্থার উন্নতি হওয়া সাপেক্ষে বাস্তবায়ন করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সমস্বরে জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর রাষ্ট্রদূত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শুরু হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদকে এবং সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাঙালিরা তদানীন্তন পাকিস্তানের অধীনে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে বৈষম্যের শিকার ছিলেন। এই বৈষম্য থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তি প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন লড়াই করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করেছি।’

স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদানের জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ে তিনি এ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি।
আবদুস সোবহান সিকদার বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, “জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী থাকায় এ বছরের স্বাধীনতা দিবস আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে নানা আয়োজনের মাধ্যমে ‘মুজিববর্ষ’ এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে করোনাভাইরাসের এ রাহুগ্রাস থেকে সব বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীর মুক্তির জন্য পরম দয়ালু সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাত করা হয়।”