আইনি জটিলতায় পিছিয়ে গেল দুর্জয়ের দেশে ফেরা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/14/photo-1439563506.jpg)
চার বছর পর মায়ের দেখা পেলেও এখনি দেশে ফিরতে পারছে না যশোরের শিশু দুর্জয়। পশ্চিমবঙ্গে একটি অনাথ আশ্রমে থাকা দুর্জয়কে দেশে ফিরতে ভারত সরকারের কিছু আইনি জটিলতা দূর করতে হবে। আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাচারের শিকার দুর্জয়ের নাম নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তার মা নমিতা দেবী ও মামা সুব্রত মণ্ডল সেই জটিলতা কাটানোর চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০১১ সালে যশোরের সীমান্ত এলাকা থেকে হারিয়ে যায় দুর্জয়। পরে সে পাচারের শিকার হয়। একপর্যায়ে তার আশ্রয় হয় কলকাতার উপকণ্ঠে কামালগাজী এলাকার ‘ইচ্ছে অনাথ আশ্রমে’। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই আশ্রমেই মা আর ছেলের পুনর্মিলন ঘটে। দুর্জয়ের বাবা বাংলাদেশে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
আজ শুক্রবার সকালেই দুর্জয়ের মা ও মামা দুর্জয়কে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কলকাতার ইলিয়ট রোডে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটিতে যান। সেখানে যান ‘ইচ্ছে অনাথ আশ্রমের’ কর্ণধার পার্থ সারথি মিত্রও।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি থেকে বেরিয়ে বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে পার্থ সারথি মিত্র জানান, দুর্জয়ের মা ও মামা এখানে এসেছেন। দুর্জয়কে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু আইনি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই দুর্জয় ফিরে যাবে তার মায়ের কোলে।
‘আইনি জটিলতার ক্ষেত্রে প্রথমত কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপদূতাবাস থেকে তাদের অনুমতিপত্র নিতে হবে যে, তারা দুর্জয়কে নিয়ে বাংলাদেশ ফিরে যেতে চায়। দ্বিতীয়ত, দুর্জয়ের নামের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দুর্জয়ের আসল নাম দুর্জয় ভক্ত। কিন্তু সে ভারতে এসে বিভিন্ন স্থানে পরিচয় দিয়েছে ‘ইন্দ্রনারায়ণ রায় চৌধুরী’ নামে। ফলে এখন দুর্জয়ের মা-বাবাকে প্রমাণ করতে হবে, দুর্জয় এবং ইন্দ্রনারায়ণ একই মানুষ।’
ইচ্ছে আশ্রমের কর্ণধার বলেন, আজ শুক্রবার অফিস সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার ওপর আগামীকাল শনিবার ও পরদিন রোববার। পরপর দুদিন ছুটি থাকায় দুর্জয়ের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়া ফের সোমবার বা মঙ্গলবার শুরু হবে।
এগুলো সম্পন্ন হতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন পার্থ সারথি মিত্র। তিনি জানান, ‘আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সরকার নির্দেশ দিলেই আমরা দুর্জয়কে মায়ের হাতে তুলে দেব।’
এ বিষয়ে হাওড়ার একটি স্বেছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার সঞ্জীব কাঞ্জিলাল এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘দুর্জয়ের মামা সুব্রত মণ্ডল বাংলাদেশ থেকে এসে প্রথম আমার সঙ্গেই যোগাযোগ করেন। আমি আমার টুনিঘাটা পিপল মুভমেন্ট অব হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্জয়ের ব্যাপারে প্রথম ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখি।’
এ ছাড়া সংগঠনটির তরফে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কাছে এ ঘটনার সিআইডি তদন্ত দাবি করা হয়েছে। যাতে কীভাবে পাচারকারীরা দুর্জয়কে নিয়ে এলো তা প্রকাশ পায়।
দুর্জয়কে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত পাশে থাকবেন বলেও জানান সঞ্জীব কাঞ্জিলাল।
তবে এই বিষয়ে সন্ধ্যার পর দুর্জয়ের মামা সুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা অত্যন্ত ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে কিছুই জানাতে পারব না।’