‘এইডস সারিয়ে’ আলোচনায় জেল ফেরত চিকিৎসক

দুরারোগ্য ব্যাধি বলে পরিচিত ‘এইডস সারিয়ে’ সাড়া ফেলেছেন ভারতের এক চিকিৎসক। ধনিরাম বড়ুয়া নামে ওই চিকিৎসকের দাবি, প্রাণঘাতী রোগ এইডস সম্পূর্ণ সারিয়ে ফেলতে পারেন তিনি। গত ৮ বছরের গবেষণা ও পরীক্ষায় ৮৬ জন রোগীকে সারিয়ে ফেলেছেন বলেও জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
ডা. বড়ুয়া নামে পরিচিত ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, হিমালয় অঞ্চলের কিছু গাছ থেকে ওষুধ বানিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে এইডসের চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো জানান, ওষুধটি মানবদেহের একটি বিশেষ জীনকে উদ্দীপিত করে এবং সেই জীন এইচআইভি ভাইরাসকে মেরে ফেলে। তাঁর এই গবেষণাকর্ম ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদেরও। বিজ্ঞানীরা ওই বিশেষ জীনের নাম দিয়েছেন, ‘বড়ুয়া বায়োলজিক্যাল কমব্যাট জিন’।
কিন্তু চিকিৎসার জন্য গবেষণা জীবন মসৃণ ছিল না কখনোই। দিল্লির মাওলানা আজাদ মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী এই চিকিৎসক গবেষণার জন্য জেল খেটেছিলেন দুই-দুবার। হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে একবার ঘোড়া আরেকবার শুকরের হৃদপিণ্ড বসিয়ে দিয়েছিলেন মানুষের শরীরে। দুইবারই ব্যর্থ হয়ে একবার ৪০ দিন আরেকবার দুই বছর কারাভোগ করেছিলেন তিনি। এত কিছুর পরও দমে যাননি এই জাত গবেষক।
সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে এই চিকিৎসক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কোমায় চল যাওয়া ৩২ বছরের এক রোগীর শরীরে বসিয়ে দেন শুকরের হৃদযন্ত্র। তারপর সাতদিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল তাঁকে। ওই ঘটনার জেরে তখন সমালোচনা হয় সারা দেশেই। এর জেরে দুই বছর হাজতবাস করেন তিনি। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে প্রায় একযুগেরও বেশি সময় ধরে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে গবেষণা করছেন।
সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি হাজির করেছেন একজন রোগীকেও। রাঘব সিং (ছদ্মনাম) নামে এক রোগী জানান, ডা. বড়ুয়া তাঁকে এন্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) দিয়ে ১৩ মাসে সুস্থ করে দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, এই বিশেষ থেরাপি এইচআইভি ভাইরাসকে মেরে ফেলে না বরং এর বৃদ্ধি বন্ধ করতে ভূমিকা রাখে।
এনডিটিভির সাথে আলাপচারিতায় রাঘব আরো জানান, এইচআইভি পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন রোগে ভুগে দুই বছরে ৮২ কেজি থেকে ৪৫ কেজিতে নেমে এসেছিল তাঁর ওজন। ডা. বড়ুয়ার চিকিৎসার পর ১৩ মাসে ৭৫ কেজিতে উঠে এসেছে ওজন।