অস্ট্রেলিয়ায় উদ্বাস্তু গ্রহণ বাড়াতে হবে

উদ্বাস্তু গ্রহণে অস্ট্রেলিয়া এখনো পিছিয়ে। এখনই পরিবর্তনের সময়। মধ্য আফ্রিকা ও উত্তর আফ্রিকার উদ্বাস্তুদের চাপ বাড়ছে। এই সপ্তাহে বড় মানবিক সমস্যায় পড়েছে ইউরোপ। জার্মানি এই ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এনেছে। দেশটি একাই চলতি বছরে কয়েক লাখ উদ্বাস্তু গ্রহণ করেছে।
উদ্বাস্তু গ্রহণে জার্মান সরকারের নীতি প্রশংসনীয়। জার্মানির অবস্থানের চেয়ে অস্ট্রেলিয়া কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। তবে কেন উদ্বাস্তু গ্রহণের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া পূর্বের নীতিই বলবৎ রাখবে?
জার্মানির জনসংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার চারগুণ। অথচ দেশটি অস্ট্রেলিয়ার ২০ গুণ ছোট। এর মানে হলো এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার ঘনত্বের চেয়ে জার্মানির জনসংখ্যার ঘনত্ব ৮০ গুণ বেশি। এমন অবস্থা সত্ত্বেও প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়া কয়েক হাজারের বেশি উদ্বাস্তু গ্রহণ করে না। দুই বছর ধরে এই নীতিতেই চলছে অস্ট্রেলিয়া। অথচ মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরই কয়েক লাখ উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি।
অথচ অস্ট্রেলিয়া সরকার বরাবরই দাবি করে উদ্বাস্তুদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সব সময়ই ইতিবাচক!
নিউজ ডট এইউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসন বা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার আচরণ বরাবরই এমন ছিল না। একসময় অস্ট্রেলিয়াও সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে স্বাগত জানাত হয়তো। ১৯৭৬ সালে তৎকালীন অভিবাসনমন্ত্রী মাইকেল ম্যাককেলার বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ায় সব অভিবাসীই স্বাগত। ওই সময় অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছিল ভিয়েতনামের উদ্বাস্তুদের প্রথম নৌকা। সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকেই অস্ট্রেলিয়ায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
তখন অভিবাসীদের ধরা হতো, যুদ্ধ বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে বাঁচতে চাওয়া মানুষ হিসেবে। আর এখন অভিবাসী বলতেই অবৈধ ও সন্দেহভাজন জঙ্গি বলে ধরে নেওয়া হয়।
অভিবাসীদের আসা রুখতে গড়া হয়েছে ছয় হাজার সদস্যের শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স। অভিবাসনপ্রত্যাশীরা খাবার ও ঘুমানোর স্থান চায়, বন্দুকের নল নয়। জার্মানির মতো অস্ট্রেলিয়ারও উচিত বর্তমান সংকটে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য এগিয়ে এসে মানবিক দায়িত্ব পালন।