সম্মান বাঁচাতে চোরের আত্মহত্যা!

কী ভাবেন আপনারা? চোরের মান-সম্মান নেই তাই তো? উঁহু! আদ্যিকালের সেই সব ভাবনা এখন পালটে ফেলুন। চুরি করবে বলে মান-সম্মান থাকবে না চোরের! তাই হয় নাকি!
আর তাই বুঝি চুরি করে ধরা পড়ার উপক্রম হতেই মান-সম্মান বাঁচাতে গেরস্তের বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল চোর। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোনী এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে বাঁশদ্রোনী এলাকার ৩৩ সি নম্বর বাড়িতে হানা দেয় চোরের দল। বেশ চুপি চুপি নিশুথি রাতে তিন চোর সেঁধিয়েও যায় ঘরের মধ্যে। কিন্তু বরাত মন্দ হলে যা হয় আর কি। খাট, আলমারি, শো-কেস হাতাতে গিয়ে ঘুম ভেঙে যায় গেরস্তের। আর ঘুম ভাঙতেই ঘরের মধ্যে মূর্তিমান তিন চোরকে দেখে চোর-চোর বলে চিৎকার শুরু করেন তিনি।
এদিকে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তড়িঘড়ি ছুটে আসেন। স্থানীয়রাই বাড়ির চারদিক ঘিরে বন্ধ করে দেন বাড়ির গেট। বাইরে বাড়তে থাকে প্রতিবেশীদের ভিড়। অবস্থা বেগতিক বুঝে ঘরের মধ্যে আটকে পড়া তিন চোর পালানোর অন্য ফন্দি আঁটে।
ঘরের দরজা দিয়ে না বেরিয়ে তারা সোজা উঠে পড়ে বাড়ির পেছন দিকে সিঁড়ির ঘরে। তারপর সিঁড়ির ঘরের অ্যাডবেস্টরের চাল সরিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় দুই চোর কোনোমতে পালাতে পারলেও আটকে যায় এক চোর।
এদিকে ততক্ষণে মারমুখী হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছে চোরদের। একসময় বন্ধ ঘরের জানালা দিয়ে চোরের দেখা পায় স্থানীয়রা। হুমকি-ধমকির পাশাপাশি শুরু হয় দরজা ভাঙার তোড়জোড়। প্রায় ধরা পড়ে যায় আরকি চোর বাবাজি। আর একবার ধরা পড়লে গণধোলাই ঠেকায় কার সাধ্যি!
আর তাই সম্মান বাঁচাতেই বোধহয় সবার চোখের সামনে চিলেকোঠার অ্যাডবেস্টর লাগানো কাঠের সঙ্গে নিজের শার্ট খুলে ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়ে চোর। ততক্ষণে পাড়া-প্রতিবেশীরা ঢুকে পড়েছে ঘরের মধ্যে। চোরকে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখে প্রথমটায় সবাই কিছুটা হতবাক হয়ে গেলেও পরমুহূর্তে তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে তারা।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় চোরকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসক ওই চোরকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃত চোরের পরিচয় জানা যায়নি। তবে এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই চোরের পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।