লাশকাটা ঘরে জীবন্ত মানুষ!

আরেকটু হলেই লাশ কাটার ছুরি-কাঁচি দিয়ে ফালাফালা করে দেওয়া হতো জীবন্ত এক মানুষের দেহ। স্রেফ কপালগুণে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ভারতের মুম্বাই নগরীর সিওন এলাকার লোকমান্য তিলক জেনারেল হাসপাতালে ঘটেছে এই আজব ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের জন্য সুলোচনা শেঠি মর্গের লাশকাটা ঘরে পাঠানো হয়েছিল একজনের মরদেহ। আনার ঘণ্টাখানেক পর ওই ব্যক্তির ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি নেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। লাশকাটার টেবিলেও তোলা হয় ওই ব্যক্তিকে।
ঠিক এমন সময় একজনের মনে হলো; আরে, টেবিলে শোয়ানো দেহটা যেন নিশ্বাস নিচ্ছে! এরপর হাতের ছুরি-কাঁচি ফেলে ‘মৃত’ ব্যক্তির নাকের কাছে হাত নিতেই চমকে উঠলেন চিকিৎসক। উঠবেনই না কেন? ‘মৃত’ ব্যক্তির নিশ্বাস নেওয়ার ঘটনা তো আর প্রত্যেকদিন দেখা হয় না তাঁর।
অবশেষে লাশকাটা ঘর থেকে ‘মৃত’ ব্যক্তিকে আবার নিয়ে আসা হলো হাসপাতালের বেডে। সুলোচনা শেঠি মর্গের কর্মীদের এক মুহূর্তের সতর্কতায় শেষ পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় ময়নাতদন্তের হাত থেকে বেঁচে গেলেন জীবন্ত ওই ব্যক্তি।
গতকাল রোববারের এই ঘটনার রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুম্বাইয়ে। স্থানীয় পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে মুম্বাইয়ের স্থানীয় সিওন থানায় খবর আসে রাস্তার মধ্যে এক ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর পুলিশ তড়িঘড়ি করে তাঁকে উদ্ধার করে লোকমান্য তিলক হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
হাসপাতালে সংরক্ষিত খাতা থেকে দেখা গেছে, দুপুর ১টায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাঁর চিকিৎসা শুরু হয় বিকেল ৪টায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মারা গেছেন বেওয়ারিশ লোকটি।
এরপর দেরি না করে সন্ধ্যাবেলাতেই ওই ব্যক্তির মৃতদেহ হাসপাতালের লাশকাটা ঘরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু বরাত জোরে তাঁর জীবিত শরীর কাটাছেঁড়ার আগমূহূর্তে এক চিকিৎসকের সতর্কতায় এ যাত্রা প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার কথা ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুখে কুলুপ এঁটেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সিওন থানার পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে তারা। যদিও এখন পর্যন্ত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অত্যন্ত দুর্বল ও অসুস্থাবস্থায় ওই ব্যক্তি গত কয়েকদিন ধরেই রাস্তার পাশে পড়েছিলেন। এ ছাড়া হাসপাতালে কার গাফিলতিতে জীবিত ব্যক্তিকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশকাটা ঘরে পাঠানো হলো, তা তদন্ত করে দেখছে সিওন থানার পুলিশ।