আরেকটি গণভোট চায় যুক্তরাজ্যের জনগণ

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ব্রিটেনের সদস্যপদ নিয়ে দ্বিতীয় একটি গণভোটের জন্য এক আবেদনে ১০ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর জমা পড়েছে। বৃহস্পতিবারের গণভোটে বেশির ভাগ মানুষ ইইউ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেওয়ার পর লোকজন এই পিটিশনে সই করছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আজ ২৫ জুন, শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন ১১ লাখের বেশি মানুষ। হাউস অব কমন্সের এক মুখপাত্র বলেছেন, পিটিশনে সই করার ব্যাপারে বহু মানুষের আগ্রহের কারণে সরকারি এই সাইটটি আপাতত ভেঙে পড়েছে।
বিবিসি জানায়, এ লাখের বেশি মানুষের পিটিশন স্বাক্ষর করলেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এটি উত্থাপন করার নিয়ম। তাই খুব শিগগির আবেদনটি পার্লামেন্টে উঠবে। এরপর এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পিটিশনটির উদ্যোগ নিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা উইলিয়াম অলিভার হিল। বিবিসির কাছে তিনি বলেন, ‘গণভোটে কোনো পক্ষে যদি ৬০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়ে এবং মোট ভোটগ্রহণের হার যদি ৭৫ শতাংশের বেশি না হয়, তাহলে আরেকটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এমন একটা প্রস্তাব করছি আমরা সরকারের কাছে।’
সেই হিসেবে বৃহস্পতিবারের গণভোটে মোট ভোট পড়েছে ৭২.২ শতাংশ, যা গতবারের সাধারণ নির্বাচনে পড়া ভোটের চেয়েও বেশি। তবে হিলে যে ৭৫ শতাংশ ভোটের কথা বলছেন তার চেয়ে কম।
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০১৪ সালে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে ভোট পড়েছিল ৮৪.৬ শতাংশ। তবে ১৯৯২ সালের পর থেকে কোনো সাধারণ নির্বাচনেই ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি।
দ্বিতীয়বার গণভোটের বিষয়টি যুক্তরাজ্যের আইন সমর্থন করে কি না তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট না। অনেকে বলছে, যুক্তরাজ্যের আইনে এ ধরনের বিধান আছে। তবে এখনো ব্রিটিশ আইন কিংবা ইউরোপের কোনো আইনে এ ধরনের বিধান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দ্বিতীয়বার গণভোটের সমর্থকদের অনেকেই ‘গণতন্ত্রের অবমাননাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। একজন টুইটারে লিখেছে, ‘স্পষ্টভাবেই বলা যায়, দ্বিতীয় একটি গণভোট হবে মর্যাদাহানিকর। এটা গণতন্ত্রের প্রতি সম্পূর্ণ অশ্রদ্ধা।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবারের ব্রেক্সিট গণভোটে ৫২% মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয় আর ৪৮% ভোট পড়ে ইইউতে থাকার পক্ষে। তবে লন্ডন, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেশির ভাগ ভোটার রায় দেন ইইউতে থাকার পক্ষে।
এদিকে ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা করেছেন যে আগামী অক্টোবর মাসে তিনি তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।