অমৌসুমি তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/09/19/asttreliyyaa-thaamb.jpg)
অস্ট্রেলিয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে যতটুকু তাপমাত্রা থাকার কথা সেরকম এবার দেখা যাচ্ছে না। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল অমৌসুমি তাপে বির্পযস্ত। পাশাপাশি তীব্র বাতাসও পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর এতেই ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে। ঠিক এ সময়েই এল নিনোর ঘোষণা দিল অস্ট্রেলিয়া। আজ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা।
দেশটির আবহাওয়া সংস্থার (বিওএম) পূর্বাভাসদানকারী কার্ল ব্রাগাঞ্জা বলেন, ‘মহাদেশের কিছু অংশে আমরা চরম অবস্থা দেখতে পাচ্ছি।’
পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলীয় প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, তখন তাকে এল নিনো বলা হয়। স্প্যানিশ শব্দ ‘এল নিনো’র অর্থ হলো ‘লিটল বয়’ বা ‘ছোট ছেলে’। এল নিনো হচ্ছে, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি জলবায়ু প্যাটার্ন, যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য, সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে বলে সতর্ক করেছে বিজ্ঞানীরা।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেপ্টেম্বরের গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬০ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর সিডনিতে আজ সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এই শহরটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯৬৫ সালে। বছরটিতে ৩৬ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৪ দশমিক তিন ফারেনহাইট) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আজকের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রেকর্ডের কাছাকাছি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, আজ সকাল পর্যন্ত এনএসডব্লিউতে ৬১টি বুশফায়ার বা দাবানলের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩টি বুশফায়ার এখন নিয়ন্ত্রণে নেই। এক বিবৃতিতে এনএসডব্লিউর রুরাল দমকল বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ উপকূলে পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি বাতাস হচ্ছে। এ জন্যই অঞ্চলটিতে দাবানলের ভয়াবহতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’ এই অঞ্চলে দাবানলের সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
পূর্বাভাসদানকারীরা বলছেন, তীব্র বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে বুধবার পর্যন্ত তাপমাত্রা বেশি থাকবে। এতে করে বুশফায়ার ২০১৯ সালের মতো ভয়ানক হতে পারে। ওই বছরটিতে দাবানলে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে লাখ লাখ প্রাণী মারা গিয়েছিল।
![](https://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/09/19/asttreliyyaa-in.jpg)
এনএসডব্লিউর রুরাল দমকল বাহিনীর কমিশনার রব রোগ্রেস বলেন, ‘সামনের কিছু দিনে আমাদের কঠিন অবস্থার মধ্যে থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।’
বুশফায়ারের জেরে এনএসডব্লিউর ২১টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ স্কুল দক্ষিণাঞ্চলের।
আল-জাজিরা বলছে, এল নিনোর জেরে অস্ট্রেলিয়া একটি বৈরি আবহাওয়ার মুখোমুখি হবে। দেশটিতে শুষ্ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ঘূর্ণিঝড় ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিবে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।