প্রচণ্ড যুদ্ধে বিপর্যস্ত গাজার হাসপাতালগুলো

অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনি ও এটির কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে সেখানে আটকা পড়েছেন। আশপাশে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় হাসপাতালটিতে অক্সিজেনের অভাবে দুই নবজাতক মারা গেছে। খবর এএফপির।
গাজার যেসব অঞ্চল ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেখানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় হামালার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। আর এই কারণেই আল-শিফা হাসপাতালের চারদিকে চলছে প্রচণ্ড বন্দুকযুদ্ধ ও বোমাবর্ষণ।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘গোলাগুলি কোনোভাবেই থামছে না, বিমান হামলা চলছেই। পাশাপাশি চলছে ট্যাংক ও কামানের গোলাবর্ষণ। হাসপাতাল প্রাঙ্গণের বাইরে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি মরদেহ, কিন্তু সেগুলোর কাছে কেউ যেতে পারছেন না।’
এই যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ গাজার উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে আশ্রয় নিইয়েছে। তবে, সেখানেও ক্রমাগত বোমার্ষণ ও গোলাগুলি চলছে।
আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘হাসপাতালটি অচল হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের বাইরে এখানে-সেখানে পড়ে থাকা মরদেহ ও আহতদেরকে ভেতরে নিয়ে আসার কোনো উপায় নেই।’
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতালটির সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিট কাজ করছে না, এতে দুই শিশু মারা গেছে এবং ৩৭ শিশুর জীবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
এ বিষয়ে ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের (এমএসএফ) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মিশন প্রধান অ্যান টেইলর বলেন, ‘আল-শিফা হাসপাতালের অবস্থা সত্যিকার অর্থেই বিপর্যয়কর।’
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল শিফা হাসপাতালে হামলার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস হাসপাতালের অবকাঠামো তাদের কমান্ড সেন্টার এবং পালিয়ে থাকার আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তবে, হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে হামলা চালায়। তাদের এই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগ ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়।
এরপর ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ফিলিস্তিনে ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং এদের মধ্যে রয়েছে কয়েক হাজার শিশু।