সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন ট্রাম্প
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশ ও ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা সংক্রান্ত একটি আদেশ থেকে শুরু করে সীমান্তে অবৈধ অভিবাসনকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা পর্যন্ত এসব আদেশের অন্তর্ভুক্ত। ট্রাম্প দ্রুত মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত কঠোর করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নেও পদক্ষেপ নিয়েছেন। গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) ওভাল অফিসে ট্রাম্প এসব নির্বাহী আদেশ ও ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন।
আদেশগুলোর মধ্যে কিছু আদেশ তীব্র আইনি বিরোধিতার মুখোমুখি হতে পারে। বিশেষ করে জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা পরিবর্তনের লক্ষ্যে যে আদেশ।
ট্রাম্প পূর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে হোয়াইট হাউসের ‘ধ্বংসাত্মক’ নীতিগুলো ‘পাঁচ মিনিটের মধ্যে’ চলে যাবে।
কয়েক ঘণ্টা আগে নতুন প্রশাসন সীমান্তে প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ, সিবিপি ওয়ান বাতিল করার পর হাজার হাজার সম্ভাব্য অভিবাসীর অভিবাসন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়।
উদ্বোধনী ভাষণে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ‘সমস্ত অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে’ এবং লাখ লাখ ‘অপরাধী বিদেশিদের’ নির্বাসিত করা হবে। তিনি মেক্সিকান মাদক কার্টেলগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করার একটি আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন।
ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল ওয়ান এরেনায় পূর্ববর্তী এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেন প্রশাসনের প্রায় ৮০টি নির্বাহী পদক্ষেপ প্রত্যাহার করেন, যেগুলোকে তিনি ‘উগ্র’ বলে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্প দিনের শুরুতে মার্কিন ক্যাপিটলে তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘হুমকি ও আক্রমণ থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করার চেয়ে আমার আর কোনো বড় দায়িত্ব নেই।’
বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট প্রতিরক্ষা বিভাগকে ‘সীমান্ত সিল’ করার এবং ড্রোন-বিরোধী ক্ষমতাসহ অতিরিক্ত সম্পদ এবং কর্মী নিয়োজিত করার নির্দেশ দেবেন।
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, এই পদক্ষেপগুলো ‘সাধারণ অভিবাসন নীতি’ তৈরির সমান।
যদিও আদেশের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন। যার অর্থ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনথিভুক্ত অভিবাসীদের সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে না। তবে জন্মগত নাগরিকত্ব মার্কিন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত এবং পরিবর্তনের জন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হবে। ট্রাম্প কীভাবে এটি অর্জনের পরিকল্পনা করছেন সে সম্পর্কে কর্মকর্তা কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।
নতুন প্রশাসন দ্রুত সিবিপি ওয়ান বাতিল করার পদক্ষেপও নিয়েছে, যা অভিবাসীদের বন্দরে উপস্থিত হওয়ার অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার জন্য ব্যবহৃত একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রথম চালু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে আটকের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করার জন্য বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা অ্যাপটিকে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন। এটি ছিল মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয়ের অনুরোধের একমাত্র আইনি পথ।
কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, যে অ্যাপটি ‘আর নেই’।
এদিকে, ট্রাম্পের অভিবাসন আদেশের প্রতি অভিবাসন সমর্থক গোষ্ঠীগুলোও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে, জাতীয় অভিবাসন ফোরামের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেনি মারে বলেছেন, আদেশগুলো হতাশাজনক কিন্তু আশ্চর্যজনক নয়।