জেলেনস্কিকে একপাশে সরিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্প
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/volodymyr_zelenskyy.jpg)
তিন বছর ধরে পশ্চিমাদের সংহতির প্রতীক ছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ইউরোপকে নৈতিকভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু এখন তার অবস্থান অনেকটাই বদলে গেছে। খবর সিএনএন।
গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে জেলেনস্কি যেন ছিলেন কিছুটা কোণঠাসা। তিনি আশা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে শান্তি আলোচনার নতুন দিক উন্মোচন করবেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি পেলেন একটি অর্থনৈতিক চুক্তির খসড়া, যা তিনি স্বাক্ষর করেননি।
বেসেন্ট যখন কিয়েভে ছিলেন, তখনই খবর আসে, ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আবারও ফোনে কথা বলেছেন। কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, যদিও ক্রেমলিন তখন বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এবার আলোচনার ফল হিসেবে মুক্তি পেলেন মার্কিন বন্দী মার্ক ফোগেল, যাকে রাশিয়া আটক করে রেখেছিল। ট্রাম্প তার মুক্তিকে ব্যবহার করলেন এক রাজনৈতিক প্রচারণা হিসেবে, যা সাধারণ আমেরিকানদের কাছে রাশিয়াকে ইতিবাচক দেখানোর সুযোগ করে দিল।
এদিকে, ইউক্রেনের জন্য গত ৪৮ ঘণ্টা যেন এক দুঃস্বপ্ন। এক সময় ইউরোপীয় নেতারা দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা করে জেলেনস্কির সঙ্গে ছবি তুলতে আসতেন। এখন তিনি ট্রাম্পের প্রোটোকলে দ্বিতীয় ব্যক্তি, যেখানে প্রথমেই রয়েছেন পুতিন।
ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনার বিষয়বস্তু জানা যায়নি। তবে এটুকু স্পষ্ট যে, পুতিন তিন বছর ধরে এই সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলেন—যেখানে পশ্চিমাদের ঐক্যে ফাটল ধরতে পারে বা ন্যাটো দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হতে পারে।
ট্রাম্প তার আলোচনার পর জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন এবং ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের জনগণের জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ’ কামনা করেন, যা তার অবস্থানের এক অদ্ভুত পরিবর্তন।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রতিরক্ষা সচিব পিটার হেগসেথ জেলেনস্কির আশা ভেঙে দেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হবে না।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/13/volodymyr_zelenskyy_inner.jpg)
এদিকে, বুধবার কিয়েভে বিরল খনিজ সম্পদ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এটি ইতিবাচক হতে পারে, তবে ইতিহাস বলছে, ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন এবং দু’বছরের মধ্যে আফগানিস্তান ছেড়ে দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান কৌশল সাবেক সেনা কর্মকর্তা কিথ কেলোগের প্রস্তাবের কাছাকাছি মনে হচ্ছে। তিনি ইউক্রেনকে ন্যাটো ছেড়ে দিতে বলেছিলেন, ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং ইউক্রেনকে সাহায্য না দিয়ে ঋণের শর্তে অর্থায়নের প্রস্তাব করেছিলেন।