ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় জেলেনস্কির পোশাক কি ভূমিকা রেখেছে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার যখন হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বাগত জানান তখন তার প্রথম মন্তব্য ছিল, ‘‘তুমি আজ বেশ পরিপাটি পোশাকে এসেছো!’’ ট্রাম্প মূলত জেলেনস্কির কালো সামরিক সোয়েটশার্টের কথা উল্লেখ করছিলেন, যেখানে ইউক্রেনের প্রতীক ত্রিশূল আঁকা ছিল। খবর বিবিসির।
২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে জেলেনস্কি আর কখনও স্যুট-টাই পরেননি। বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বা মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়ার সময়ও তিনি সামরিক পোশাক পরেছেন।
জেলেনস্কির দাবি, তার এই সামরিক পোশাক ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনে লড়াইরত সৈন্যদের প্রতি সংহতির প্রতীক। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন সহায়তাবিরোধী ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের জন্য এটি দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্পর্শকাতর ইস্যু।
শুক্রবারের ওভাল অফিস বৈঠকে এই ইস্যু সামনে চলে আসে, যখন একজন মার্কিন সাংবাদিক জেলেনস্কিকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কেন স্যুট পরেননি? এটা কি এই অফিসের মর্যাদার প্রতি অসম্মানের প্রকাশ?’’
এই প্রশ্নটি করেন রিয়েল আমেরিকা ভয়েস নামক ডানপন্থী মিডিয়া চ্যানেলের প্রধান হোয়াইট হাউস প্রতিবেদক ব্রায়ান গ্লেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনার কি স্যুট আছে? অনেক আমেরিকান মনে করেন, আপনি যথেষ্ট সম্মান দেখাচ্ছেন না।’’

জেলেনস্কি এই প্রশ্নে স্পষ্টতই বিরক্ত হন এবং বলেন, ‘‘এই যুদ্ধ শেষ হলে আমি স্যুট পরব। হয়তো আপনার মতো, হয়তো আরও ভালো, হয়তো আরও সস্তা!’’—তার মন্তব্যে কক্ষে হাসির রোল পড়ে যায়।
এই ইস্যু দ্রুতই রাজনৈতিক রূপ নেয়। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কির প্রতি কড়া ভাষায় বলেন, ‘‘আপনার এখানে এসে আমেরিকান মিডিয়ার সামনে এভাবে তর্ক করা উচিত নয়। এটি অসম্মানজনক।’’
বিশ্বের টিভি ক্যামেরার সামনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে এমন উত্তপ্ত বিতর্ক কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন তৈরি করেছে।
যদিও বৈঠকের শেষদিকে ট্রাম্প কৌশলী ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘আমি তোমার পোশাক পছন্দ করি। আমি মনে করি, সে সুন্দরভাবে পোশাক পরেছে।’’
তবে পর্দার আড়ালে, বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা নাকি জেলেনস্কিকে স্যুট পরতে অনুরোধ করেছিলেন, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন বলে অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বৈঠকটি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বিতর্ক আরও তীব্র হয়, যখন ট্রাম্প প্রশাসন জেলেনস্কিকে ওভাল অফিস থেকে বের করে দেয়।
এতে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন সংকটের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।