এবার পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে ভারতে ইনফ্লুয়েন্সার গ্রেপ্তার

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলা থেকে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জ্যোতি মালহোত্রা নামে এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে আধুনিক যুদ্ধ কেবল সীমান্তে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ চালানো সম্ভব। খবর এনডিটিভির।
তদন্তে জানা গেছে, ট্রাবেলউইথজো (TravelwithJo) নামক একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলের স্বত্বাধিকারী জ্যোতি মালহোত্রার পাকিস্তান হাইকমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তাদের কাছে ভারতের বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য পাচার করতেন।
পুলিশ সুপার শশাঙ্ক কুমার জানান, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মালহোত্রা বেশ কয়েকবার পাকিস্তান সফর করেছেন। গত বছর পাকিস্তান থেকে ফিরে কয়েক মাসের মাথায় তিনি চীন ভ্রমণে যান। পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, জ্যোতি মালহোত্রার বিলাসবহুল জীবনযাপন ও ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ তার আয়ের উৎসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি ইউটিউবে ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও পোস্ট করতেন। তবে তার আর্থিক লেনদেন সন্দেহজনক। তদন্তকারীরা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয় খতিয়ে দেখছেন।
ওই ইনফ্লুয়েন্সারের বাবা হরিশ মালহোত্রার অভিযোগ, তার মেয়েকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি আইএএনএস নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ‘সে (জ্যোতি) আমাকে বলেছে যে সে কিছুই ভুল করেনি। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। তারপর শুক্রবার রাতেই পুলিশ তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। এরপর সমস্ত জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করে জ্যোতিকে থানায় নিয়ে যায়। তখনই জানা যায়, জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, ওড়িশা পুলিশও পুরী-ভিত্তিক এক ইউটিউবারের সঙ্গে মালহোত্রার যোগসূত্র খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনা সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি একটি নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। পুলিশ এখন মালহোত্রার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, এর আগে একই অভিযোগে হরিয়ানায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১২ মে রাজ্যটির খালসা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র দেবেন্দ্র সিং ধিলোনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই অভিযোগে পানিপথ থেকে নওমান এলাহী নামে ২৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।