টেক্সাসে অনলাইন নিরাপত্তা আইন পাস, অ্যাপল-গুগলের জন্য বড় ধাক্কা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে একটি নতুন আইন পাস হয়েছে, যার ফলে অ্যাপল ও গুগলকে এখন তাদের অ্যাপ স্টোরে ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করতে হবে।
এই নতুন আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্করা অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কোনো অ্যাপ ডাউনলোড বা ইন-অ্যাপ পারচেজ করতে পারবে না। অ্যাপল এবং গুগল উভয়ই এই বিলের বিরোধিতা করেছিল। খবর বিবিসির।
অ্যাপলের একজন মুখপাত্র বলেন, “আমরা মনে করি শিশুদের নিরাপদ রাখতে আরও কার্যকরী উপায় আছে, যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হস্তান্তর ছাড়াই সম্ভব।”
তারা আরও বলেন, “এই আইন অনুযায়ী আবহাওয়া আপডেট বা খেলাধুলার স্কোর জানানো অ্যাপ ডাউনলোড করতে গেলেও প্রতিটি টেক্সানকে তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে, যা সকল ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য হুমকি।”
গুগল এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
জাতীয় পর্যায়ে “কিডস অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট” (কেওএসএ) নামে একটি দ্বিদলীয় বিল পাস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে, তবে হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে তা আটকে আছে।
এই আইনে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর কনটেন্ট রোধে ডিজাইন পদ্ধতি পরিবর্তনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় আইন না থাকায় টেক্সাস ও ইউটাসহ একাধিক রাজ্য নিজস্ব আইন প্রণয়ন করছে।
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিক মেটা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে, ব্যবহারকারীর বয়স যাচাইয়ের দায়িত্ব অ্যাপ স্টোর সরবরাহকারীদের নেওয়া উচিত।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, অ্যাপল সিইও টিম কুক টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটকে ফোন করে বিলটি আটকে দেওয়ার অনুরোধও করেছিলেন।
নতুন আইন অনুযায়ী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে টেক্সাসে অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে বয়স যাচাই এবং অভিভাবকের অনুমতি বাধ্যতামূলক হবে।
অ্যাপল ইতোমধ্যেই শিশুদের জন্য কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেছে। ১৩ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপ স্টোর ব্যবহারে অভিভাবকের সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, পাশাপাশি ডিভাইস সেটআপে বয়স নির্ধারণের বিকল্পও যুক্ত করেছে তারা।

এটি প্রথমবার নয় যে টেক্সাস প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইন করে চাপ দিচ্ছে। ২০২১ সালে রাজ্য সরকার এমন আইন প্রণয়ন করে, যাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো কোনো ব্যবহারকারীকে রাজনৈতিক মতামতের কারণে নিষিদ্ধ করতে না পারে।
এই আইনগুলো যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইন নিরাপত্তা বনাম ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও বাকস্বাধীনতা নিয়ে একটি বড় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে।