আটকের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরছে কোরিয়ার নাগরিকরা

জর্জিয়ার হুন্ডাই কারখানায় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অভিযানে আটক হওয়া ৩০০ জনেরও বেশি দক্ষিণ কোরিয়ান কর্মীকে মুক্তি দেওয়া পর দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্টের প্রধান কর্মী কাং হুন-সিক জানান, এই শ্রমিকদের মুক্তির বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জর্জিয়ার হুন্ডাই কারখানার উৎপাদন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৪৭৫ জনকে আটক করে, যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ফেডারেল এজেন্টরা আটক কর্মীদের বাইরে লাইনে দাঁড়াতে নির্দেশ দিচ্ছে। কাউকে কাউকে হাত, গোড়ালি ও কোমরে শিকল পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আটককৃতদের বেশিরভাগকে ফ্লোরিডা সীমান্তের কাছে জর্জিয়ার ফোকস্টনে একটি অভিবাসন আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি, তবে তদন্ত চলছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানো হয়েছে। এই সর্বশেষ অভিযানটি ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী নীতির কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর যে প্রভাব পড়ছে, তা তুলে ধরে। হুন্ডাই-এলজি কমপ্লেক্স জর্জিয়া রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ বিদেশি বিনিয়োগ।
এক বছর আগে হুন্ডাই মোটর গ্রুপ এই কারখানায় বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরি শুরু করে। তারা এলজি এনার্জি সলিউশনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে একটি ব্যাটারি প্ল্যান্টও তৈরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া তার নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই অভিযানের জন্য উদ্বেগ ও অনুশোচনা প্রকাশ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন বলেছেন, রাষ্ট্রপতি লি জে-মিয়ং দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের অধিকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকারী কোরীয় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম অন্যায়ভাবে লঙ্ঘন করা উচিত নয়।

বিরোধী দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) আটকের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এই ঘটনা দেশের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
পিপিপির মুখপাত্র পার্ক সুং-হুন এই ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট লি-কে দায়ী করেছেন, কারণ তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।