ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের দ্বন্দ্বে ধস নামল টেসলার শেয়ারে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদের জড়িয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার শেয়ারে ভয়াবহ ধস নেমেছে। একদিনেই কোম্পানিটির শেয়ার ১৪ শতাংশ কমে যায়। ফলে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বাজারমূল্য থেকে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা) হারিয়েছে টেসলা। খবর বিবিসির।
এর আগে মাস্কের সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। যার মধ্যে রকেট সংস্থা স্পেসএক্সও রয়েছে। এই সংস্থাটির সঙ্গে সরকারের কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে। ট্রাম্পের হুমকির জবাবে মাস্ক পাল্টা বলেছেন, ‘গো অ্যাহেড, মেক মাই ডে।’
দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির সম্পর্কের এই আকস্মিক পরিবর্তন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি দেখা গেছে, যা নীতিগত মতবিরোধ থেকে দ্রুত ব্যক্তিগত আক্রমণে পরিণত হয়।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস এই ঘটনাকে ‘আশ্চর্যজনক ও বাজারের জন্য একটি ধাক্কা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই দ্বন্দ্ব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যা কোম্পানির উপর প্রভাব ফেলতে পারে। স্বচালিত গাড়ি ও রোবোটিক্স খাতকে প্রসারিত করতে চাইছে টেসলা। ফলে সংস্থাটি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে একটি শিথিল নিয়ন্ত্রক পদ্ধতির (কর সুবিধা) আশা করেছিল।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ও তার দলের অন্যান্য রিপাবলিকানদের জন্য ২৭ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন মাস্ক। সেই সুবাদে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের দারুণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ের পর মাস্কের জন্য আলাদা একটি দফতর তৈরি করেছিলেন, যার নাম ছিল ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)। এর কাজ ছিল প্রশাসনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কাটছাঁট করে অর্থনৈতিক সাশ্রয় করা। কিন্তু গত মাসে `ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট‘ নামে কর ও ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদন ট্রাম্প। সেই বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপরই ডিওজিই থেকে পদত্যাগ করেন মাস্ক।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাস্কের সুসম্পর্ক থাকায় টেসলার প্রতি বিনিয়োগকারীদের বাড়তি ঝোক ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বিরোধের জেরে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব খারাপ হতে শুরু করে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের সঙ্গে বৈঠকের সময় বিরোধের জন্য মাস্কের ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলছেন, পর্যায়ক্রমিক কর ও ব্যয় সংক্রান্ত এই বিলের সরাসরি প্রভাব পড়ত মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলার উপর।