সার্বিয়ায় সরকারবিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, বহু গ্রেপ্তার

সার্বিয়ায় আগাম নির্বাচনের দাবিতে এবং প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচের ১২ বছরের শাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয় সময় শনিবার (২৮ জুন) সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ছয় পুলিশ আহত হয়েছেন এবং বহু বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।
বিক্ষোভকারীরা “আমরা নির্বাচন চাই!” স্লোগান দিতে দিতে বেলগ্রেডের প্রধান স্লাভিয়া স্কয়ারে জড়ো হন। স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থা আর্কাইভ অফ পাবলিক গ্যাদারিংস জানিয়েছে, বিক্ষোভে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ অংশ নেন, যা ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের অন্যতম বৃহত্তম সমাবেশ।
পুলিশ প্রধান দ্রাগান ভাসিলেভিচ জানিয়েছেন, বিক্ষোভে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে অনেককে আটক করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভুচিচ সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “বিক্ষোভকারীরা সার্বিয়াকে উল্টে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।”
গত ডিসেম্বর উত্তরাঞ্চলের নভি সাদে একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। জনগণ দুর্নীতি ও অবহেলাকে এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দায়ী করছে। প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুসেভিচ পদত্যাগ করলেও প্রেসিডেন্ট ভুচিচ এখনও ক্ষমতায় রয়েছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক আইনের ছাত্র স্টেফান ইভাকোভিচ বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।” আরেক বিক্ষোভকারী স্লাদজানা লোয়ানোভিচ বলেন, “প্রতিষ্ঠানগুলো হাইজ্যাক হয়েছে, ব্যাপক দুর্নীতি চলছে।”
বিক্ষোভ শুরুর আগে আন্দোলনের নেতারা প্রেসিডেন্টকে রাত ৯টার মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে “চূড়ান্ত সময়সীমা” বেঁধে দেন, যা ভুচিচ অগ্রাহ্য করেন।
ভুচিচের দল সারাদেশ থেকে বাসভর্তি সমর্থক এনে বেলগ্রেডে জড়ো করে এবং প্রেসিডেন্ট অফিসের সামনে মার্চ মাস থেকে বসে থাকা সমর্থকদের সঙ্গে একত্রিত করে। প্রেসিডেন্ট ভুচিচ অভিযোগ করেন, “অজানা বিদেশি শক্তি” এই বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে।

আন্দোলনের কয়েকদিন আগেই পুলিশ প্রায় বেশ কয়েকজন বিরোধী কর্মীকে “সংবিধানবিরোধী কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসবাদ” অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া ক্রোয়েশিয়া ও মন্টিনিগ্রোর কয়েকজনকে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। বিক্ষোভের দিন বোমার হুমকির অজুহাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়, যাতে মানুষ বেলগ্রেডে যেতে না পারে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছে।