ভারতের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করলেন ট্রাম্প

রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখার ‘জরিমানা’ হিসেবে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ আগস্ট) এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। খবর এনডিটিভির।
এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা চীনের শুল্কের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি ও পাকিস্তানের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সংকটগ্রস্ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নকারী অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ভারতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়েছেন। তিনি ইসলামাবাদের শুল্ক ১৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন ও পাকিস্তানের তেল মজুদ উন্নয়নের পরিকল্পনাসহ একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন। এই পদক্ষেপটি বিশ্ব ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বদলে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, ভারত একটি ভালো বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল না...। আমি মনে করি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেব, কারণ তারা রাশিয়ার তেল কিনছে। তিনি ভারতের কঠোর ও ঘৃণ্য অ-আর্থিক বাণিজ্য বাধা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ট্রাম্পের এই কঠোর সমালোচনার জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশই এখনো রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করছে। ভারত সরকারের মতে, বিশ্ববাজার পরিস্থিতির কারণে রাশিয়ার তেল কেনা বাধ্যতামূলক একটি প্রয়োজনীয়তা। একই সময়ে ভারত ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদাহরণ টেনে বলেছে, ইইউও ২০২৪ সালে রাশিয়া থেকে ৬৭.৫ বিলিয়ন ইউরোর তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনেছিল।

এই নতুন শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বছর জো বাইডেন যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন থেকে দুই দেশ একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল, কিন্তু ভারতের কৃষি বাজারে আমেরিকান পণ্যের প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিরোধের কারণে তা সফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প দিল্লিকে খুব বড় শুল্ক অপব্যবহারকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।