নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ পরিকল্পনার নিন্দা বাংলাদেশসহ ৩১ দেশের

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তথাকথিত ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশসহ ৩১টি আরব ও ইসলামি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তিনটি আঞ্চলিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। খবর সৌদি গেজেটের।
যৌথ বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর মন্তব্যকে আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি ‘ঘৃণ্য ও বিপজ্জনক অবমাননা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রীরা ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা ও একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে প্রত্যাখ্যান করারও নিন্দা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপগুলো জাতিসংঘের প্রস্তাব, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২৩৩৪-এর লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই পদক্ষেপগুলো দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। এছাড়া পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্তে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের ওপর একটি অবৈধ হস্তক্ষেপ।’
স্বাক্ষরকারী দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপন, ফিলিস্তিনি শহর ও শরণার্থী শিবিরে আক্রমণ ও পবিত্র স্থান, বিশেষ করে আল-আকসা মসজিদের ওপর হামলা উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং শান্তির সম্ভাবনা নষ্ট করছে।
বিবৃতিতে যেকোনো যুক্তিতে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে ও গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি, গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারকে গণহত্যার পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা না হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজাকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নিশ্চিত করেছেন ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে একটি ঐক্যবদ্ধ আইনি এবং রাজনৈতিক কাঠামোর অধীনে গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে পূর্ণ শাসনব্যবস্থা পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের, তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে ইসরায়েলকে তার কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে, ফিলিস্তিনিদের জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সমর্থন করার আহ্বান জানানো হয়।
এই যৌথ বিবৃতিতে সৌদি আরব, আলজেরিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, চাদ, কোমোরোস, জিবুতি, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, তুর্কিয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা স্বাক্ষর করেছেন।

এটি আরব লীগ, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) মহাসচিবের মাধ্যমেও অনুমোদিত হয়েছে।