গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ জনের প্রাণহানি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সাহায্যপ্রার্থী। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তীব্র খাদ্য সংকটে অপুষ্টির কারণে আরও আটজন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তর-পশ্চিমে আসদা এলাকায় শনিবার (২৩ আগস্ট) ইসরায়েলি কামানগুলো তাঁবুতে হামলা চালায়, যেখানে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। এই হামলায় ছয় শিশুসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ড্রোন হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে খাবারের জন্য অপেক্ষমান আরও দুজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টিতে দুই শিশুসহ আরও আটজন মারা গেছেন। এর ফলে মানবিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা ২৮১ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১১৪ জন শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, দুর্ভিক্ষ নীরবে বেসামরিক নাগরিকদের দেহ ধ্বংস করছে, শিশুদের তাদের জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
জাতিসংঘ শুক্রবার (২২ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। গ্লোবাল ফুড মনিটরিং সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ছয় লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
জাতিসংঘ ইসরায়েলকে গাজায় সাহায্য সরবরাহে পরিকল্পিত বাধা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই দুর্ভিক্ষকে মানবসৃষ্ট বিপর্যয় বলে আখ্যায়িত করেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের দুর্ভিক্ষ ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও মনে করে যে, এই ঘোষণা অনেক দেরিতে করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় তাদের টেলিগ্রাম বিবৃতিতে লিখেছে, অনাহারের প্রকৌশল গণহত্যার একটি দিক, যার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের পদ্ধতিগত ধ্বংস ও প্রজন্মকে ধ্বংস করার নীতিও অন্তর্ভুক্ত।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত ২৭ মে থেকে জিএইচএফ (গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন) প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে সাহায্য চাইতে গিয়ে দুই হাজার ৭৬ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৫ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় ৬২ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।