ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছেন লিসা কুক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ঠেকাতে ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নর লিসা কুক আদালতে যাচ্ছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কুকের আইনজীবী অ্যাবি লওয়েল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আইনজীবী অ্যাবি লওয়েল বলেন, “শুধুমাত্র একটি রেফারেল লেটারের ভিত্তিতে কুককে বরখাস্তের প্রচেষ্টা কোনো আইনগত ভিত্তি বহন করে না। আমরা এ বেআইনি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করব।” খবর রয়টার্সের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে ১১১ বছরে এর আগে কোনো গভর্নরকে প্রেসিডেন্ট সরাসরি বরখাস্তের চেষ্টা করেননি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডের স্বাধীনতার জন্য নজিরবিহীন হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি সোমবার (২৫ আগস্ট) অভিযোগ করেন, কুক ২০২১ সালে নেওয়া বন্ধকী ঋণে (মর্টগেজ) ‘প্রতারণা ও সম্ভাব্য অপরাধমূলক কার্যকলাপে’ জড়িত ছিলেন। ট্রাম্প বলেন, “আমাদের এমন মানুষ দরকার যারা শতভাগ স্বচ্ছ। কুকের ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না।”
ফেড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গভর্নররা সাধারণত ১৪ বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং তাদের সহজে অপসারণ করা যায় না। এতে বলা হয়, “ফেডের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক তথ্য এবং আমেরিকান জনগণের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের ভিত্তিতে হতে হবে।”
যদিও ট্রাম্প কুককে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন, ফেড স্পষ্ট করেছে যে আদালতের রায় ছাড়া তার পদে কোনো পরিবর্তন হবে না। আগামী ১৬-১৭ সেপ্টেম্বর ফেডের নীতি-সভার আগে এ বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
কুককে বরখাস্তের প্রচেষ্টায় ডলারের ওপর আস্থা কমেছে এবং মার্কিন ঋণপত্রে অস্থিরতা বেড়েছে। তবে ওয়াল স্ট্রিট সূচকগুলো মঙ্গলবার সামান্য উর্ধ্বমুখী ছিল।
কুককে সরানো গেলে ট্রাম্প ফেড বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য নিয়োগের সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে হোয়াইট হাউসের অর্থনীতিবিদ স্টিফেন মিরান এবং সাবেক বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ডেভিড ম্যালপাসের নাম আলোচনায় এসেছে।
বিষয়টি নিয়ে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটন স্কুলের গবেষক পিটার কন্টি-ব্রাউন বলেন, কুকের যেসব মর্টগেজ প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, সেগুলো তার ফেডে যোগদানের আগের বিষয় এবং সিনেট ভেটিংয়ের সময়ই প্রকাশিত ছিল। তাই এগুলোকে “ফর কজ” বরখাস্তের ভিত্তি ধরা যুক্তিসঙ্গত নয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলেই ফেড অর্থনৈতিক নীতি পরিচালনায় সর্বোত্তম ফল দেয়।
এসজিএইচ ম্যাক্রো অ্যাডভাইজার-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ টিম ডুই মন্তব্য করেন, “প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের হাত থেকে ফেড অনেকটা রক্ষা পেয়েছিল, এবার আর সে সৌভাগ্য নাও থাকতে পারে।”